“উপকূল দিবস” রাষ্ট্রীয ঘোষণার দাবিতে আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে মানব বন্ধন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উপকূল ফাউন্ডেশন।
মানব বন্ধনে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও উপকূল গবেষক এম আমীরুল হক পারভেজ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির কারণ না হয়েও বাংলাদেশ চরম ঝুঁকি রয়েছে। উপকূলের মানুষের ন্যায্যতার দাবিতে উপকূল দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
মানব বন্ধনে সংহতি জানিয়ে ৭০’ এর ভয়াল কালরাত স্মরণে দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, সরকারি তিতুমীর কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো: জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, দৈনিক কালের কন্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মীর মো: জসীম, ঢাকা সাব এডিটর কাউন্সিলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান, সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসলে উদ্দিন রিফাত, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদক হামজা রহমান (অন্তর), শেখ লায়লা, মানব বন্ধনের সমন্বয়কারী মোবাশ্বের হোসেন চৌধুরী, মানব বন্ধনের সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উপকূল গবেষক এম আমীরুল হক পারভেজ চৌধুরী উপকূল দিবস দাবি করে পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য দ্বীপ উন্নয়ন বোর্ড গঠন, উপকূলের বেড়িবাঁধ ১০-১৫ ফুট উঁচু করণ ও বেড়িবাঁধ ঢালে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) বিশ্বের ৫ ধরনের ভয়াবহ প্রাণঘাতি আবহাওয়া ঘটনার শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া “৭০ এর ভয়াল ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়টিকে পৃথিবীর ইতিহাস সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত এবং
এই পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্ণিঝড় সমূহের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অনেক আগেই এই দিনটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রয়োজন ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে একদিনে এত প্রাণহানি কোথায় ঘটেনি। প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় দেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ত্বরান্বিত করেছে বলে জানান। বক্তারা উপকূল দিবস এর সমর্থন করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অবহেলাকে দায়ী করে ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির ক্ষতিপূরণও দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের এ দিনে ভয়াবহ প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। উপকূলীয় দ্বীপ ও চরসহ বহু এলাকা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বিরাণ জনপদে পরিনত হয়।
মানব ববন্ধন শেষে উপকূল ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা ভয়াল ‘৭০ নিহতের মাগফিরাত কামনায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। ২০১৫ সাল থেকে উপকূল ফাউন্ডেশন “উপকূল দিবস” ও “বিশ্ব উপকূল দিবস” ঘোষণার দাবিতে মানব বন্ধন কর্মসূচিসহ জাতীয় সেমিনার পালন করে আসছে।