কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপভ্যান চাপায় ৬ ভাইকে ইচ্ছাকৃতভাবে দ্বিতীয়বার চাপা দিয়ে খুন করেছে ঘাতক চালক। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বলছে চালক গাড়িটি পেছনে এনে আহত ব্যক্তিদের দ্বিতীয়বার চাপা না দিলে এতো প্রাণহানি ঘটতো না।
বুধবার (৯ নভেম্বর) পিকআপভ্যানের চালক সাহিদুল ইসলাম, মালিক মাহামুদুল করিম ও তার ছেলে মো. তারেককে আসামি করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পিবিআই। পিবিআই অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, চালক গাড়িটি দ্বিতীয়বার পেছন দিকে আহত ব্যক্তিদের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে চালিয়ে পালিয়ে যান। দ্বিতীয়বার গাড়িটি পেছনে না চালালে এতো প্রাণহানি হতো না। তাই তদন্তে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পিবিআই কক্সবাজারের পরিদর্শক এনামুল হক চৌধুরী (মামলার তদন্ত কর্মকর্তা) বলেন, পিকআপের মালিক মাহামুদুল করিম অনভিজ্ঞ ও লাইসেন্সবিহীন একজন চালকের হাতে গাড়িটি চালানোর জন্য তুলে দিয়েছেন, যা সড়ক পরিবহন আইনের পরিপন্থী। তাছাড়া দুর্ঘটনার খবর শুনেও তিনি (মাহামুদুল) আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেননি। মাহামুদলকে এ কারণে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মো. তারেক ঘটনার সময় পিকআপভ্যানে চালকের পাশে বসা ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার না করে উল্টো তিনি চালককে দ্রুত পালিয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণে তাকেও আসামি করা হয়েছে।
চালক সাহিদুল ঠান্ডা মাথায় ইচ্ছাকৃতভাবে জেনে বুঝে গাড়িটি পেছনের দিকে চালিয়েছেন। তার উচিত ছিল প্রথমবার চাপা দেওয়ার পর আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কিংবা পুলিশকে খবর দেওয়া। কিন্তু তা না করে আহত ব্যক্তিদের দ্বিতীয়বার চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় নিহত ৬ ভাইয়ের মা মৃণালীনি বালা বলেন, আমার ছেলেদের হত্যার সর্বোচ্চ বিচার চাই। বেঁচে থাকতে হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে মরতে চাই।
উল্লেখ্য, ৮ ফেব্রুয়ারি মালুমঘাটের একটি মন্দিরে বাবার শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান শেষ করে ভোরে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান মুন্নী সুশীল। ছয় ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় প্লাবন সুশীল বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করেন। মামলাটি সাত দিন তদন্ত করে কর্তৃপক্ষ তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়।
আনন্দবাজার/কআ