আসতে পারে পাসপোর্ট ছাড়া ৪৮ অথবা ৭২ ঘণ্টার জন্য ভারতে যাওয়ার নিয়ম। সীমান্তবর্তী এলাকার বাংলাদেশি নাগরিকরা যেন ভিসা ছাড়া ভারতের আত্মীয়-স্বজনদের বাসা থেকে ঘুরে আসতে পারেন, সেই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এমন অনেক গ্রাম আছে, যেখানকার মানুষের একটা ঘর বাংলাদেশের ভেতর, অন্য ঘর ভারতে। নানা রকম উৎসবে এক পরিবার অন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায়। সদ্য শেষ হওয়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বিজিবির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা পাসপোর্ট ছাড়া শুধু লিখিত রেখে ৪৮ বা ৭২ ঘণ্টার জন্য সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষদের চলাচল করার অনুমোদন দিতে পারি।
ভারতে নাগরিক আইন সংকট নিয়ে তিনি বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, অবৈধভাবে কেউ সীমান্ত যাতে অতিক্রম করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। এটি আমাদের রুটিন দায়িত্ব। এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস) বা সিএএ (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
তবে ভারতে নাগরিক আইন নিয়ে সংকট তৈরির পর গত দুই মাসে অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবি ৪৪৫ জনকে আটক করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, গত এক বছরে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে নারী-শিশুসহ ৯৭২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ২৫৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটকদের সবার বাড়ি বাংলাদেশে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমরা বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি, যারা বিভিন্ন সময়ে দালালের মাধ্যমে কাজের সন্ধানে ভারতে পাড়ি দিয়েছেন বা পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
ভারতে নাগরিক আইন সংকটের পরের অনুপ্রবেশের সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৪৪৫ জন অনুপ্রবেশ করেছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহের মহেশপুর এবং সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে এসেছে তারা। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, কাজের সন্ধানে তারা সেই দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। অনেকে বেঙ্গালুরুতে কাজ করতেন। নাগরিক আইন সংকটের পর তারা দেশে ফিরেছেন।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস