ঢাকা | বুধবার
৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সম্ভাবনাময় টাইলস কারখানা

সম্ভাবনাময় টাইলস কারখানা

নীলফামারীর ডিমলায় সদরের বাবুরহাট এলাকায় ছোটো আকারে গড়ে ওঠা উদ্যোক্তা মনিরুজ্জামান আজাদের তৈরি ব্লক ইট ও পার্কিং টাইলসের কারখানাটি উঁকি দিচ্ছে বিরাট সম্ভাবনার। বর্তমানে নিজ উপজেলার গণ্ডি পেরিয়ে আজাদের তৈরি এই পার্কিং টাইলস ব্লক ইট ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

আজাদ জানান, ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ায় স্বপ্ন দেখতাম। ২০০৫ সালে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ১১ বছর চাকরি করেন বেসরকারি একটি এনজিওতে। তবে, উদ্যোক্তা হওয়ায় স্বপ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। সবশেষ ২০১৬ সালে চাকরি ছেড়ে ফিরে আসেন নিজ এলাকায়।

আজাদ বলেন, এনজিওতে কাজ  করার  সময় খেয়াল করি, কারখানায় তৈরিকৃত ব্লক, কংক্রিট ইট ও পার্কিং টাইলসে ব্যবহৃত প্রধান কাঁচামাল সিমেন্ট, বালু ও নুড়ি পাথর যা আমাদের নিজ এলাকাতেই বেশ সহজলভ্য। ছোটো আকারে শুরু করতে পুঁজিও তেমন লাগছে না। তখনি এলাকায় ফিরে এমন একটি কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সাল থেকে কারখানা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করি। এরপর মাত্র দুই লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে প্রতিষ্ঠা করি জামান পার্কিং টাইলস। ২০১৯ এর ১ জানুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি পার্কিং টাইলস,ব্লক ও কংক্রিট ইট। প্রথম থেকেই নিজ উপজেলায় ব্যাপক সাড়া পাই। আস্তে আস্তে পার্শ্ববর্তী জেলায় যাওয়া শুরু করে আমার পণ্য। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার পাচ্ছি।

তবে শুরুটা চমৎকার হলেও  করোনা সংকট অনেকটাই ভুগিয়েছে পরিশ্রমী এ উদ্যোক্তাকে।

ব্যাংকঋণের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে আশ্বাস মিললেও সহায়তা মেলেনি।ফলে ঘুরে দাঁড়াতে হিমমিশ খাচ্ছেন।

তার কারখানায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন এই উদ্যোক্তা। এ বিষয়ে তিনি জানান, প্রথমে ১জন শ্রমিককে কাজ শিখিয়ে তাকে নিয়ে পথচলা শুরু করলেও এখন তার কারখানায় ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সরকারি সহযোগীতা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋন পেলে এই কারখানাটি আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে। তখন ১৫০/২০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী দিনে দেশকে উন্নত করতে হলে এসএমইর বিকল্প নেই। সামগ্রিক মূল্যায়নে এ খাতই অর্থনীতির প্রাণ। তবে, এ খাতের উদ্যোক্তাদের দুঃখের যেন শেষ নেই।

উদ্যোক্তাদের ঋণ পেতে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার দীর্ঘ ভোগান্তির পরও মিলছে না ঋণ সহায়তা। ফলে অনেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সহযোগীতার আশ্বাস দেন তিনি।

উদ্যোক্তাদের সরকারিভাবে সহযোগীতা ও সহজ ঋণ পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন। তিনি জানান, উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বৃহত্তর কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। তাদের সফলতা অন্যান্য তরুণদেরকে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করবে।ফলে বেকারত্ব দূর হয়ে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন