নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের ইসহাক মেল্লা নামীয় পরিচিত খেলার মাঠটি প্রভাবশালীরা দখলের পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে স্থানীয় যুবক-কিশোর-শিশু খেলোয়াড়সহ জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নড়াইলের জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইতনা সামছুল উলুম মাদ্রাসার মহাতামিম মাওলানা হান্নান সরদার ও সাবুক্তিগীন লিপু সরদারের নেতৃত্বে ইতনা গ্রামের মধ্যপাড়ার খেলার মাঠটি কবরস্থানের নামে দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। দীর্ঘ ৪ পুরুষের খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত মাঠটি ভূমি দস্যুদের অপকৌশলে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছে কোমলমতি শিশুরা। মাঠটির দুই পাশে ইতিমধ্যে পাকা বাউন্ডারি নির্মাণ শুরু করা হয়েছে। মাঠের চার পাশ থেকে অপকৌশলে বাদ রাখা হয়েছে বেশ কিছু জমি। মাঠে যাতে শিশুরা খেলতে না পারে সে জন্য মাঠে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে ইটের খোয়া ও বালুর স্তুপ।
অভিযোগকারীরা জানান, তাদের দাদা, বাবা-চাচারাসহ নিজেরা ও তাদের সন্তানেরা বংশ পরম্পপরায় এ মাঠে খেলাধুলা করে আসছেন। বর্তমানে খেলার মাঠটি ইতনার একটি কুচক্রী মহল কবরস্থানের নামে দখল করার পায়তারা চালাচ্ছে।
এলাকাবাসী সৈয়দ জাফর আলী, মোল্যা আ. রউফসহ আরও কয়েকজন বলেন, ইতনা গ্রামের তছলিম উদ্দিন সরদারের ছেলে লিপু সরদার, গ্রামের শাহীন সরদারসহ ৫ থেকে ৬ জন এ খেলার মাঠটিকে কবরস্থানের নাম করে নিজেদের দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে। সরকারি খ তফসিলভুক্ত জমিতে গড়ে উঠেছে খেলার মাঠটি। পূর্বে খেলার মাঠটি ইসাকের মাঠ ও পরবর্তীতে ইতনা ইউনাইটেড ক্লাবের মাঠ নামে পরিচিতি রয়েছে। কি কারণে এ খেলার মাঠ দখল করে কবরস্থান তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে বিষয়টি সকলে বুঝলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না । আমরা মহল্লাবাসী শিশুদের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত করে মাঠটিকে কবরস্থান বানাতে দিতে চাইনা। গ্রামে কবরস্থান রয়েছে। তারপরও যদি কবরস্থান বানাতে হয় এ মৌজায় অনেক খাস জমি রয়েছে, সেই জমিতে কবরস্থান তৈরিতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।
মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করে এমন কয়েকজন কিশোর খেলোয়াড় মারুফ, তামিম, জাকারিয়া, সাকিম, সায়েম সহ আরো ১০ থেকে ১৫ জন খেলোয়াড় বলেন, আমরা এ মাঠে প্রতিদিন খেলাধুলা করি। আমাদের প্রায়ই গ্রামের কিছু লোক খেলাধুলা করতে বাধা দেন। মাঠে যাতে খেলতে না পারি সে জন্য ইটের খোয়া ছড়িয়ে রাখে তারা। শুনছি এখানে নাকি কবরস্থান বানাবে। ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ সরকারের সকল মহলে আমাদের প্রাণের দাবি যেন আমাদের খেলার মাঠটি অপকৌশলে কেউ দখল করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার।
সম্প্রতি কয়েকজন সাংবাদিক ইতনা গ্রামের খেলার মাঠটি সরজমিনে দেখতে যান। সাংবাদিকদের সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে ইতনা কেন্দ্রীয় কবরস্থান কমিটির সভাপতি সাবুক্তিগীন লিপু সরদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, জোর করে খেলার মাঠ দখল করার প্রশ্ন উঠে না। কবরস্থান কমিটির ক্রয়কৃত জমিতে কাজ চলছে।
একই বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শুন্য থাকায় এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোসলিনা পারভিনের সাথে। তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো আছে। তবে মাঠের দক্ষিণ পাশে কবরস্থানের জায়গায় কবরস্থান থাকবে এবং খেলার মাঠ যেইটুকু বাচ্চারা খেলাধুলা করে সেটুকু খেলার মাঠই থাকবে।