ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএসএমএমইউতে গবেষণা দিবস উদযাপিত

বর্ণাঢ্য  আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ গবেষণা দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় (২৭ অক্টোবর) দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, গবেষণা পোস্টারিং, ওরাল প্রেসেন্টেশন, মিট দ্যা প্রেস, গবেষণা এ্যাওয়ার্ড প্রদান ও  আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়। 

সকাল ৮ টায়  বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিদেবন, ৮ টা পনের মিনিটে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের  সামনে থেকে শুরু হয়ে বটতলা, টিএসসি, এ-ব্লক ডি-ব্লক, সি-ব্লক প্রদক্ষীণ করে কেবিন ব্লকে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৮টা হতে শহীদ ডা. মিলন হলে  বৈজ্ঞানিক অধিবেশন ও পোস্টার প্রেজেন্টেশনে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক গবেষকগণ।

বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে ১০টি ওরাল প্রেজেন্টেশন এবং ২০টি পোস্টার প্রেজেন্টেশন করা হয়। ১০টায় শহীদ ডা. মিল্টন হলে মিট দ্যা প্রেস ও ১১ টায় শহীদ ডা. মিলন হলে গবেষণা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর উন্নতমানের  শ্রেষ্ঠ গবেষণার জন্য কয়েকশত গবেষকদের মাঝ থেকে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, মেডিক্যাল অফিসারসহ ১৬ জনকে গবেষণা পদক বা রিসার্চ এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, এমপি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিতে গবেষণার বিকল্প নাই। গবেষণার ধারা অব্যাহত না রাখতে পারলে দেশ পিছিয়ে যাবে। তরুণ চিকিৎসকরা গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিক দিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

এসব কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন,  রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গবেষণার বিকল্প নাই। শুধুমাত্র ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করতে পারলে বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। বিএসএমএমইউয়ে গবেষণা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে উপাচার্য এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, চিকিৎসকদের মাঝে গবেষণার করার জন্য আগ্রহ ও উৎসাহের দিক দিয়ে নতুন জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের চাহিদা পূরণে গবেষণা খাতে বছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন। ইতোমধ্যে গবেষণাখাতে বরাদ্দ পাঁচ গুণ বৃদ্ধি করে  ৪ কোটি থেকে ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়াও গবেষণা কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য চলতি শিক্ষাবর্ষে এই প্রথম একসঙ্গে ২৪ গবেষক চিকিৎসককে পিএইচডি কোর্সে এনরোলমেন্ট করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদানকৃত সমন্বিত গবেষণা পুরস্কারের ২০ শতাংশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা অর্জন করেছে।

মাননীয় উপাচার্য আরো বলেন,  স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের যে পরিমাণ ফসল হতো তা দিয়ে ৭ কোটি মানুষ খেত। বর্তমানে সেই একই জমির ফসলে ১৭ কোটি মানুষের খাবার খায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই কৃষি গবেষণায় উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশে খাদ্যে উদ্বৃত্ত হয়।  এ থেকেই অনুধাবন করা যায় গবেষণার মাধ্যমে অসাধ্যকে সাধন করা যায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম বলেন, বিশ্বমানের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশনের পক্ষ হতে যথাসম্ভব সহায়তা প্রদান করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমআরসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, গবেষণায় ইথিকাল পার্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই গবেষণার ক্ষেত্রে ইথিকাল মানদন্ড বজায় রাখতে হবে। 

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনে (বিএমএ) সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন বলেন, গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপÑউপাচার্য  (গবেষণা ও উন্নয়ন)  অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গবেষণাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। গবেষণা দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আরো বেগবান হবে। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল ও অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ গবেষণা দিবসের উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব উপÑরেজিস্ট্রার সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মেহজাবিন হক।

এসব কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারিবৃন্দ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন