ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১২৬ বছরের স্টেশন চালুর দাবি

১২৬ বছরের স্টেশন চালুর দাবি

জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবনে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী লস্করপুরে ১৮৯৬ সালে চালু হয় লস্করপুর রেলওয়ে স্টেশন। পরে প্রায় ১১২ বছর পর এ স্টেশনটি ২০০৮ সাল থেকে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ১২৬ বছরের পুরনো এ স্টেশনটি। যে কারণে ওই স্টেশনে নিজেদের আস্তানা গড়ে তুলেছে মাদকসেবীরা। প্রায়দিন রাতেই তাদের আনা গোনা দেখা যায়। তাছাড়া স্টেশনের স্টাফদের কোয়ার্টারে ছিন্নমূল মানুষেরা বসবাস করছেন।

তবে বন্ধ থাকা স্টেশনটি মাঝে মধ্যে পরিদর্শন করছেন বলে জানিয়েছেন শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাদশা আলম। তিনি বলেন, ‘স্টেশনে মাদকসহ কোন প্রকারের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা  গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে, দীর্ঘ ১২৬ বছর পর স্টেশনটি দ্রুত চালুর জন্য দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে স্টেশনটি পুনরায় চালু হলে ট্রেন যাতায়াতে সুবিধা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য হেলাল মিয়া জানান, এক সময়ে এ স্টেশনের অনেক ঐতিহ্য ছিল। স্টেশনটির নাম অনুসারে ইউনিয়ন ও একটি গ্রাম গড়ে উঠেছে। যা ঐতিহ্যবাহী লস্করপুর ইউনিয়ন নামে জেলাজুড়ে সু পরিচিত। স্টেশনটি চালু করা হলে আবার ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য। বসবে দোকানপাট ও কাঁচামালের বাজার। এতে মানুষের সমাগম ঘটবে।

জানা যায়, এক সময়ে ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথে যাতায়াতে লস্করপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রচুর সুনাম ছিল। স্টেশন এলাকা মুখরিত ছিল যাত্রীদের পদচারণায়। এর পাশে বিকেলে কাঁচামালের বাজার বসত। ছিল দোকানপাটও। তবে ২০০৮ সালের পর থেকে স্টেশনটি বন্ধ থাকায় এখানে কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। এতে আর আসেন না যাত্রীরাও। বর্তমানে স্টেশন ভবনটিতে নেই কোন আসবাবপত্র। পুরনো কিছু কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। দরজা ও জানালা ভেঙে পড়েছে। এতে রাখা হয় গরু ও জ্বালানির জন্য গাছের পাতা এবং লাকড়ি। ভবনের স্থানে স্থানে ফাটল। ছাদ ও দেয়াল থেকে প্লাস্টার খসে পড়ছে। জরাজীর্ণ এ পরিত্যক্ত ভবনটি যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে আশঙ্কা তাদের। স্টেশন থেকে যাতায়াতের রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। পরিত্যক্ত কোয়াটারে কয়েকটি ছিন্নমূল পরিবার বসবাস করছে।

স্টেশনে বসবাসকারী ব্যক্তিরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত স্টেশনের কোয়াটারে বসবাস করছেন। তাদের কোন জায়গা জমি নাই। যে কারনে ওই পরিত্যক্ত ভবনটি তাদের ভরসা। তবে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে কিছু মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। তারাও আবেদন করেছেন। ঘর পেলে এখান থেকে চলে যাবেন।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মোঃ আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, অনেক পুরনো এ স্টেশনটি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বর্তমানে কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। বলা যায়, এটি এখন পরিত্যক্ত। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইলে চালু হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন