ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান উৎসব

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দান উৎসব

বান্দরবানের সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের পর্যটন কেন্দ্র প্রান্তিকলেক সংলগ্নে শাক্যমিত্র বৌদ্ধ বিহারে শান্তমিত্র বৌদ্ধ ম্রো অনাথ আশ্রম ও বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের ৪র্থ তম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার দিনব্যাপী পঞ্চশীল প্রার্থনাসহ ধর্মীয় আচার পালনের মধ্য দিয়ে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করা হয়।

সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, দায়ক দায়িকাদের পদচারণায় মুখর হতে থাকে বুদ্ধ বিহার প্রঙ্গন। অনুষ্ঠানে পবিত্র মঙ্গলাচরণ পাঠ করা হয়। এতে শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শিশুসহ নানা বয়সের পূণ্যার্থীরা অংশ নেন। পরে পঞ্চশীলের মাধ্যমে মঙ্গলাচরনের পর চীবর উৎসর্গ করা হয়। বিহারে সমবেত প্রার্থনায় অংশ নিয়ে জেলার বুদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ চীবর দান করেন।

উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতায় বিহারে অবস্থারত ভিক্ষু ও আগত ভিক্ষুদের জন্য নিজের বোন চীবর ও বাজার থেকে ক্রয় করার চীবর পূণ্য লাভের দান করেন ভক্তরা।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভদন্ত শুদ্ধানন্দ মহাথেরো এম এ অধ্যক্ষ বড়হাতিয়া বোধিনিকেতন বিহার সভাপতিত্বে ও ভদন্ত শান্তমিত্র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ের হেডম্যান মংথোয়াইচিং মারমা। ২য় অধিবেশনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৪নং সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকলীগের সভাপতি বাবু প্রজ্ঞা সার বড়ুয়া পাপন, শিবলী ফাউন্ডেশনের সভাপতি বাবু দুর্লভ বড়ুয়া, মিনহাজ গ্রুপ লিমিটেডের সিইও বাবু নয়ন বড়ুয়া।

বৌদ্ধ ধর্ম শাস্ত্র মতে, চীবর দানের চেয়ে পৃথিবীর সবক দানের চেয়ে ১৬ গুনের বেশি পূণ্য লাভ করা যায়। তাই কঠিন চীবর দানকে দানোত্তম বা দানশ্রেষ্ঠ বলা হয়। ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে।

এদিকে শাক্য মিত্র বৌদ্ধ ম্রো অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভদন্ত শান্তমিত্র বলেন, যারা পূণ্য লাভের আশায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা কঠিন চীবর দানোৎসব স্বত:স্ফূতভাবে পালন করতে স্ব ইচ্ছায় দান ও সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি পূণ্যারাশি দান করছি। তিনি দু:খের সহিত বলেন, এ ধর্মীয় বিহারটি দূরে হওয়াতেই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বরাদ্দ ও অর্থ সহযোগিতা তেমনটা পাওয়া যায়নি। তবুও ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে সকলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন