ঢাকা | শুক্রবার
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পায়ের অভাবে ঘুরছে না ভাগ্যের চাকা

পায়ের অভাবে ঘুরছে না ভাগ্যের চাকা

সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। তবে, সংসারের স্বচ্ছলতা আর ফেরেনি, সঙ্গী হয়েছে দুর্ভাগ্য। সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়ে প্রবাস জীবন ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছী গ্রামের যুবক ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ (২৬)। ইব্রাহিম অঞ্জনগাছী গ্রামের তোফাজ্জেল মন্ডলের ছেলে।

স্বজনরা জানান, ২০১৬ সালে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ করে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে যান ইব্রাহিম। তবে, ছয় মাস না যেতেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন তিনি। দুর্ঘটনায় হারাতে হয় ডান পা। এরপর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বর্তমানে এক পা সঙ্গী করে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন ভাগ্য বিড়ম্বিত এ যুবক।
ইব্রাহিমের মা আনোয়ারা খাতুন বলেন, সংসারের ভালোর জন্য ১০ কাঠা জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। তবে, সড়ক দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। ছেলেকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তার কোম্পানি কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি। এখন আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। কোনো রকম খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।

আনোয়ারা খাতুন আরও বলেন, কত মানুষ হেঁটে বেড়ায়, তবে আমার ছেলেটা ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। এটা চোখের সামনে দেখা একজন মায়ের জন্য খুবই কষ্টের বিষয়। আর এ কষ্ট বলে বোঝানো যায় না। একটি কৃত্রিম পা হলে ছেলেটা হেঁটে বেড়াতে পারতো।

ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ বলেন, বিদেশ থেকে ডান পা হারিয়ে দেশে ফেরার পর বেকার হয়ে পড়ি। বর্তমানে ধার-দেনা করে স্থানীয় বাজারে একটা ছোট দোকান দিয়েছি। তবে দোকান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না।

ইব্রাহিম বলেন, আমার এক বছর বয়সী একটা মেয়ে আছে, ওর মুখের দিকে তাকালে খুব কষ্ট হয়। আমার পা না থাকার কারণে মেয়েকে নিয়ে কোথাও যেতেও পারি না। আমার একটা কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দিলে উপকার হতো।

স্থানীয় অঞ্জনগাছী গ্রামের সাবেক মেম্বর আমান উল্লাহ আমান বলেন, ইব্রাহিমের এ দুর্ঘটনার পর তাকে একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনমাস পর পর ২২৫০ টাকা ভাতা পায়। এখন তার একটা কৃত্রিম পা প্রয়োজন। যদি সরকার বা কোনো বেসরকারি সংস্থা তার একটি কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দিতো, তাহলে ইব্রাহিমের অনেক উপকার হতো।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন