ঢাকা | সোমবার
৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘনকুয়াশায় মুড়ছে উত্তরাঞ্চল

ঘনকুয়াশায় মুড়ছে উত্তরাঞ্চল
  • মধ্য-দক্ষিণভাগে তীব্র রোদের দহন
  • তিনদিন ধরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

দেশের মধ্য ও দক্ষিণভাগের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের আবহাওয়ার তারতম্য বেড়েই চলেছে। মধ্যভাগে যখন তীব্র রোদের দহন তখন উত্তরাঞ্চলে কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম, মাঠের পর মাঠ। একেবারেই হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় বিশেষ করে সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার পারদ আগেভাগেই নামতে শুরু করে। যার সঙ্গে মধ্যভাগের কোনো মিল থাকে না। যখন ঢাকায় তীব্র রোদের দহনে হাঁসফাঁস অবস্থা তখন তেঁতুলিয়ায় হিম হিম শীতের ছোঁয়ায় কুকড়ে যাওয়ার অবস্থা।

স্থানীয় সূত্রমতে, গত শুক্রবার রাত থেকে পঞ্চগড়ে কুয়াশায় ঝরেছে অনেকটা টিপটিপ বৃষ্টির মতো। গতকাল শনিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঘেরা ছিল চারপাশ। এরপর ঝলমলে রোদ দেখা যায়। আর সেই রোদেই আবার বাড়তে থাকে দিনের তাপমাত্রা। দিনরাতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি। অনেকটাই মরুভূমির যেন আবহাওয়া। দিনে বেশ গরম, অথচ রাতে ঠান্ডা। আবার রাত যতই গড়াচ্ছে ততই তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এক ধরনের চরমভাবাপন্ন বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাতভর টিপ টিপ বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরে পড়ায় পিচঢালা পথগুলো যেমন ভিজে গেছে, তেমনি ঘরবাড়ির চালেও ঝরেছে পানি। সকালে গাছপালার সবুজ পাতা, সবুজ ধানক্ষেত কিংবা ঘাসের ওপর শিশিরবিন্দু দেখা গেছে। যেখানে রোদ পড়ে চিকচিক করে অপরূপ দৃশ্য তৈরি করেছে। এমনকি ভোর থেকে সকাল অবধি ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল শনিবার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যে তাপমাত্রা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। অবশ্য আগেরদিনেওই তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা ছিল খানিকটা বেশি ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ একইদিনে সন্ধ্যা ছয়টায় রেকর্ড করা তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তেঁতুলিয়ায় দিন আর রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান প্রায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অবশ্য গত বৃহস্পতিবার সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবার সন্ধ্যা ছয়টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেক্ষেত্রে তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল অনেকটা কম। প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অনেকেই বলছেন, আগের চেয়ে শীত অথবা গরমের চরিত্র পাল্টে গেছে। তাছাড়া হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় পঞ্চগড়ে শীতের আগমণ আগেভাগেই ঘটে থাকে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে আগেই শীতের চাদরে ঢাকা পড়তে থাকে গোটা উত্তরাঞ্চল।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, দিনে তাপমাত্রা বেশি আর রাতে কম থাকায় শীতজনিত সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। বিশেষত, শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। ঘন কুয়াশায় সড়কে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে চালকদের সতর্ক থাকতে হবে। শুধু করোনাই নয়, কুয়াশা থেকে রক্ষা পেতেও মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন