দেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরানো এবং শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোতে স্থানান্তর চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বরাবর এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী মাহমুদুল হাসান এক বার্তায় জানান, আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডে ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সন্তান জন্ম গ্রহণ করছে। এ রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বছর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হচ্ছে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।
প্রথমত, বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে সই করা রাষ্ট্র নয়। তাই বাংলাদেশ আইনিভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নয়।
দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠী নয়। তারা স্বাধীনতার জন্য কোনো সংগ্রামে লিপ্ত নয় । তাদের কোনো প্রবাসী সরকার নেই। যার কারণে রোহিঙ্গাজনগোষ্ঠী অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অধিকারী নয়।
তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আঞ্চলিক কোনো সংস্থা যেমন সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ানের কোনোরূপ চুক্তি নেই। ফলে এককভাবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কোনভাবেই এককভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রে যে রাষ্ট্রগুলো আয়তনে বড় তাদের বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে। এটাই আন্তর্জাতিক রীতি বলে জানানো হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় লাখ লাখ সিরিয়ার শরণার্থী ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রসমূহে প্রবেশ করে। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শরণার্থী গ্রহণের জন্য কোটা নির্ধারণ করে দেয়।
বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে, ইউক্রেনের শরণার্থীরা ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এক্ষেত্রে একক কোনো দেশ এসব শরণার্থীদের বোঝা নেয়নি বরং সম্মিলিতভাবে নিয়েছে।
আইনি নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে সরাতে সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ান রাষ্ট্রসমূহে শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন নোটিশে।
আনন্দবাজার/কআ