- দাফন মিলবে মাটিতে
- পড়ালেখার সুযোগ পাবে সন্তানেরা
- মিলবে ভূমির অংশীদারিত্ব
নদীর জলে আগুন জ্বলে কখনো কি শুনেছেন? নদীর জলে হয়তো আগুন জ্বলে না। তবে, নদীর জলের উপরে যাদের বসবাস। জন্ম মৃত্যু বিয়ে সবটাই জলের উপরে। জলের উপরে ভাসা মানুষের মনের দুঃখ কষ্টতো জলের উপরেই গাঁথা। এমনকি মৃত্যুর পরে ভাসিয়ে দেয়া হতো নদীতে তাইতো। বলাই যায় জলের উপরে আগুন জ¦লা তো নিছক ছেলে খেলা। আহা জীবন? পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে ও তাড়া কোনদিন মাটির অংশীদারিত্ব দাবি করতে পারেনি। যেন তারা মানুষ নয়। মনে হয় নদীর জলে ভেসে থাকা একটুকরো শেওলা।
রাঙ্গাবালি উপজেলার চরমোন্তাজে মান্তা সম্প্রদায়ের বাস। এমনই একটি মুসলিম সম্প্রদায়কে দেখা যায় পটুয়াখালী রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইস বাজারে। জীবন যাদের জলে ভেসে চলে নাম তাদের মান্তা সম্প্রদায়। এরা মুসলিম। নদী ভাঙনে তাদের শেষ সম্বল ভিটেমাটি হারিয়ে সামান্য মাথাটুকু গোঁজার ঠাঁই ছিল না। মরে গেলে মাটি দেওয়ার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। তাই তারা নদীর জলে নৌকাতে বসতি গড়ে তুলেছেন। জন্ম-মৃত্যু বিয়ে সবটাই তাদের নৌকায়। দিন কাটে তাদের নদীর জলে মাছ শিকার করে। তাই তারা যুগ যুগ ধরেই মূলধারার বাহিরে থাকতো। জল ছেড়ে ডাঙায় উঠলে তারা ডাঙার মানুষদের সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাওয়াতে পারত না।
তবে আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন শেখ হাসিনা। এ জলে ভাসা মানুষের দুঃখ কষ্ট জলে ভাসতে ভাসতে তার কানে পৌঁছায়। তখনই প্রধানমন্ত্রী রাঙ্গাবালি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৬৩টি মান্তা সম্প্রদায়ের পরিবারের জন্য নদীর পাড়ে ঘর নির্মাণ করেন। ইতোমধ্য ৩৩টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩০টি পরিবারের জন্য ৩০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলোমান রয়েছে। এখন থেকে তাড়াও পাবে মাটি। মৃত্যুর পরে তাদের ও দাফন হবে মাটিতে।
মান্তা সম্প্রদায়ের লোকেরা বলেন, আমরা মরে গেলে আমাদের মাটি দেয়ার জায়গা ছিলো না। আমাদেরকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রী ঘর দিয়েছেন এজন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আমরা মরে গেলে আমাদের মাটি দেওয়া হবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করার মত সুযোগ পাবে। ছেলে মেয়েরা বলতে পারবে আমার বাবা মায়ের কবর এখানে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসফাকুর রহমান বলেন, রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ৬৩টি মান্তা সম্প্রদায়ের পরিবারের জন্য নদীর পাড়ে ঘর নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্য ৩৩টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩০টি পরিবারের জন্য ৩০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলোমান রয়েছে।