বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের খননে আড়াই হাজার বছর আগের মৌর্য যুগের প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন বেরিয়ে এসেছে। এসব দেখে ধারণা করা হয়েছে, মহাস্থানগড় ওই যুগেও ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে পুরোপরি ভাবে সমৃদ্ধ ছিল। চলতি বছরের গত নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ও ফ্রান্সে এর যৌথ খননকালে এ সব নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়।
প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতর সূত্র আনুযায়ী, মহাস্থানগড় ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে খনন করা হয়। খননের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ন নিদর্শন পাওয়া গেছে এখানে।
এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা করা শুরু হয়ে ছিল। একই সঙ্গে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর নিজস্ব অর্থায়নে খনন করছে। গত ৮ নভেম্বর মহাস্থানগড়ের বৈরাগীর ভিটার ৫ স্থানে খনন শুরু হয়।
২০১৭ সালে বৈরাগীর ভিটায় খননের পর প্রায় ১ হাজার ৩০০ বছর আগে নির্মিত তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরের নিদর্শন পাওয়া যায়। এবার ওই খনন স্থানের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে খনন করা হয়েছ।খননকালে যে সব প্রত্ন নিদর্শন পাওয়া গেছে , বৈরাগী ভিটা এলাকায় বাণিজ্যিক বা খাদ্য সরবরাহ একটি কেন্দ্র ছিল। এর কারণ ৫টি জায়গায় ৮টি কূপের সন্ধান মিলেছে। একই সাথে বেশকিছু মৃৎ পাত্র, মৃৎ পাত্রের ভগ্নাংশ, মাটির বড় একটি ডাবর (মটকা) পাওয়া গেছে।
শাহজাদপুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মোহাম্মদ যায়েদ জানায়, এবার খননে যে সব কূপের সন্ধান মিলেছে তার মধ্যে একটি ছিল ব্যতিক্রম। এটি ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপ ছিল। এ কূপের প্রায় ৬ ফুট পর্যন্ত খনন করে তারা ৪৬ সারি ইটের গাঁথুনি পেয়েছে এবং অন্য সাতটি পাতকূয়া।
তিনি বলেন, ইটের গাঁথুনিবিশিষ্ট কূপটি সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দী অর্থাৎ পাল আমলের হবে। অন্যান্য কূপও সমসাময়িক সময়ের হতে পারে। সে হিসেবে প্রায় ১৩০০ বছর আগে এ অঞ্চলে ইটের গাঁথুনিবিশিষ্ট কূপ থেকে মানুষ পানি সংগ্রহ করতেন।
আনন্দবাজার/এম.কে