ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালী ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে ৬০ বছর কারাদণ্ড

সোনালী ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে ৬০ বছর কারাদণ্ড

নোয়াখালীতে ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে ইলিশ ক্রয়ে ঋণের ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠেছে সোনালী ব্যাংকের ৪ সিনিয়র কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে।

দুদকের স্পেশাল জজ আদালত ঐ ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ৬০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন। একই সাথে বিভিন্ন ধারায় তিন কোটি ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দুদকের নোয়াখালী স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এএসএম মোরশেদ খান সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদের আয়-ব্যয়ের হিসেব তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তরা নোয়াখালী সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এ জিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুন, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এমএ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদ। এছাড়াও সদর উপজেলার সোনাপুর বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স ডলফিন ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্ত্বাধিকারী ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক, ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আসামিরা আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে কোল্ড স্টোরেজে ইলিশ মাছ রেখে ব্যবসার জন্য ২০১২ সালের ১০ জুলাই দুই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। মাছ না কিনেই ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ১৪টি চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। ঐ টাকার বিপরীতে ৫১ হাজার ৪৩৯ কেজি ইলিশ মাছ ক্রয় করে সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও সেটি না করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে চক্রটি।

এমন ঘটনায় সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তফা কামাল সাতজনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল সুধারাম থানায় মামলা করেন।

এই ঘটনায় দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

ঐ বছরে ২৩ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালীর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান যিনি বর্তমানে উপপরিচালক হিসেবে গোয়েন্দা ইউনিট এর প্রধান কার্যালয় কর্তৃক তদন্ত শেষে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন, অ্যাডভোকেট সামছুদ্দিন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান সিদ্দিকী।

এদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম মীর আবদুল লতিফ ও ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাক আহমেদ সিদ্দিকীকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

পলাতক আসামি নিজাম উদ্দিন ফারুককে ২৫ বছরের সাজা ও দুই কোটি দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

এছাড়া চার ব্যাংক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ২০ বছর করে কারাদণ্ড ও এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বিভিন্ন ধারায় সাজা একইসঙ্গে হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর করে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন