ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফোন নম্বর না পেয়ে পরীক্ষাথীদের পেটালো বখাটেরা

ফোন নম্বর না পেয়ে পরীক্ষাথীদের পেটালো বখাটেরা

ফরিদপুরের সালথায় ফোন নাম্বার না দেয়ায় পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে পিটিয়েছে বখাটে ছাত্ররা এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রও হামলার শিকার হয়। এরা সবাই দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল। খবর পেয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ছাত্রীদের উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার ছাত্র-ছাত্রীরা হলেন, রুকসানা আক্তার, রুমি খানম, মেহেবুবা আকতার, সুমাইয়া আক্তার, মীম খাতুন, জুলেখা আকতার, ডলি আকতার, মো. হামিম ফকির ও রিয়াজুল ইসলাম। তারা সবাই উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী। এসব ছাত্র-ছাত্রীরা সালথা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ইব্রাহিম হুসাইন বলেন, গত ৩ থেকে ৪ দিন আগে আমার মাদরাসার কয়েকজন ছাত্রী সালথা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে তাদের গাড়িরোধ করে ফোন নম্বর চায় মাঝারদিয়া মাহিরুন্নেছা দাখিল মাদরাসার ছাত্র রাহাত হোসেন ও তার বন্ধু স্থানীয় বখাটে হৃদয় শেখ। হৃদয় শেখ সোনাপুর এলাকার ইউপি সদস্য মুন্নু শেখের ছেলে। ফোন নাম্বার না দেয়ায় তখন তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও কথাকাকাটি হয়।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে রাহাত ও হৃদয়ের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে বুধবার দুপুরে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে সোনাপুর মোড় থেকে ওই ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় রাহাত, হৃদয় ও তাদের সহযোগীরা। সহযোগীদের বেশিরভাগই মাঝারদিয়া মাদরাসার ছাত্র। তারা লোহার রড, হাতুরি, রামদা ও চাপাতি দিয়ে ওই ছাত্রীদের আঘাত করে। এ সময় হামলা ঠেকাতে গিয়ে ওই ছাত্রীদের সঙ্গে থাকা কয়েকজন ছাত্রও আহত হয়। তবে কেউ মারাত্বক আহত হয়নি। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

হামলার শিকার জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্র হামিম ফকির বলেন, আমরা পরীক্ষা দিয়ে অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে সোনাপুর মোড়ে আমাদের গাড়ি থামায় দুটি ছেলে। তারা প্রথমে অটোরিকশার চাবি ছিনিয়ে নেয়। পরে গাড়িতে থাকা ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। কিছু সময় পর ওই ছেলে দুটির সাথে স্থানীয় কয়েক যুবক ও মাঝারদিয়া মাদরাসার ছাত্ররা যোগ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

অটোরিকশার চালক আব্বাস আলী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার পথে কয়েকজন আমাকে বলে এই গাড়ি থামা। গাড়ির থামানোর সাথে সাথেই দুইজনকে টেনে নামিয়ে মারধর শুরু করে। আমি ঠেকাতে গেলে রামদা ও চাপাতি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসলে আমি ভয়ে পালাই।

মাঝারদিয়া মাহিরুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপার মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি ভালো জানি না। আমি আমার ফরিদুপরের বাসায় অবস্থান করছি। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শেখ সাদিক বলেন, ৯৯৯-এ ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি সোনাপুর মোড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি মেয়েদের ফোন নম্বর চাওয়াকে কেন্দ্র করে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে মাঝারদিয়া মাহিরুন্নেছা দাখিল মাদরাসার ছাত্রদের সাথে ও জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের মারামারি বাধে। পরে জগজ মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়। আগামী ১০ অক্টোবর ব্যবহারিক পরীক্ষার দিন ওই ছাত্র-ছাত্রীদের পুলিশী নিরাপত্তায় কেন্দ্রে আনা-নেয়া হবে। এ ঘটনায় হামলার শিকার জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্র হামিম ফকির থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন