ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাদনের ফাঁদে আসহায় মানুষ

দাদনের ফাঁদে আসহায় মানুষ

পত্নীতলায় পাড়া-মহল্লায় ক্রমেই রমরমা হয়ে উঠছে দাদন ব্যবসা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে দিনমজুর, মধ্যবিত্ত এমন কি ছোট-বড় ব্যবসায়ীরাও আটকা পড়ছে অবৈধ দাদন ব্যবসায়ীদের পাতানো ফাঁদে।

মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। লকডাউনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কর্মহীন মানুষদের মাঝে চড়া সুদে ঋণ বিতরণ করে দাদন ব্যবসায়িরা। কর্মহীন সাধারণ মানুষগুলো নিরূপায় হয়ে চড়া সুদে তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হয়। এমন ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর পত্নীতলার চন্ডিপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নূর আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে।

গত ২১ সেপ্টেম্বর নূর আলম সিদ্দিকী তার ফেসবুক আইডিতে দুটি স্ট্যাটাস দেন। প্রথম স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- সুদের টাকা না দেবার কারণে আজকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালা লাগিয়ে দিয়েছে, ২০ তারিখে টাকা দেবার ডেট ছিল, কোন এক কারণবশত টাকাটা দিতে ব্যর্থ হই। তারপর আমি আগামী পাঁচ দিন সময় তাদের কাছে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে সময় দেয় নাই এবং আমাকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ২য় স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন আমি যদি আত্মহত্যা করি এর জন্য দায়ি থাকবে চন্ডিপুর গ্রামের আনোয়ার, মো. বিদ্যুৎ ও গোলামীন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নূর আলম সিদ্দিকী এ প্রতিবেদকে বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের লকডাউনের সময় আমার দোকান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। যার ফলে আমি কর্মহীন হয়ে পড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে তাদের কাছ থেকে আমি ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেই। লকডাউন খোলার পর এ টাকার অংক এসে দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আমি অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে তাদেরকে ১ লাখ টাকা পরিশোধ করি। বাকি টাকা দেবার ডেট ছিলো গত বুধবারে। পারিবারিক সমস্যার কারণে আমি তাদের কাছ থেকে দিন সময় চাইলে তারা আমাকে মারধর করে এবং আমাকে আমার দোকান থেকে বের করে দিয়ে দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগি বলেন, তারা মানুষকে ঋণ দেয়  হাজারে প্রতিদিন ১০ টাকা হারে। তারা আমাদের অসহায়ত্বেকে পুঁজি করে আমাদেরই রক্ত চুষে খাচ্ছে। তাদের শিকার হয়ে আজ আমাদের এলাকার সাধারণ অসহায় মানুষেরা গুমরে কাঁদে। তাদের অত্যাচারে রাতের আঁধারে মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে দাদন ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা ( গোলামীন ) এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, টাকা আমাদের কাছে থেকে নিয়েছে এর যথেষ্ট প্রমান আছে। তবে, নূর আলম সিদ্দিকীর দোকান বন্ধের বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন