ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামীণ টেলিকমের জমি ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব তলব

গ্রামীণ টেলিকমের জমি ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব তলব

গ্রামীণ টেলিকমসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব জমি ক্রয়-বিক্রয়ের যাবতীয় হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিষ্ঠানগুলোর শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত যতো জমি ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, সেসব হিসেবে জন্য এ তলব করা হয়েছে।

গতকাল রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান সই করা চিঠিতে এ নথিপত্র তলব করা হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বরাবর পাঠানো চিঠির সূত্রে জানা যায়। চিঠিতে এসব হিসাব নথিপত্র আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমসহ এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় কত মূল্যে কি পরিমাণ জমি ক্রয় করা হয়েছে। পরে কোথায় বিক্রি করা হয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ক্রয় করা জমিগুলো কীভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট ছকসহ দলিলের সত্যায়িত ফটোকপি চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জমি ক্রয়ের টাকা প্রতিষ্ঠানগুলো কোথা থেকে পেয়েছে। পাশাপাশি জমি বিক্রির টাকা কোথায় কীভাবে রক্ষিত আছে। আর লাভ কোথায় কীভাবে খরচ করা হয়েছে তার বিবরণ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে জমি হাতবদল হলে কিসের ভিত্তিতে হয়েছে। এসব জমিতে কোনো ভৌত অবকাঠামো নির্মিত হলে ওই অবকাঠামোর বিস্তারিত খরচের সব হিসাবসহ এ সংক্রান্ত অর্থ কোথা থেকে এসেছে, তার বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

দুদকের চাহিদা করা নথিপত্রের মধ্যে আরও রয়েছে সারাবো মৌজায় ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্কে বিভিন্ন সময় মোট ৪৮ দশমিক ৩১ বিঘা জমি ক্রয় করা হয়েছে। এসব জমির ক্রয়মূল্য, অর্থের যোগান, ক্রয় দলিল ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কাছ থেকে জমি ক্রয়ের রহস্য কি – ব্যাখ্যাসহ যাবতীয় বিবরণ চাওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের সময় অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এরই মধ্যে গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতের মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের তিন নেতা ও আইনজীবী ইউসুফ আলীসহ ৮ ব্যক্তির ১৯টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করা হয়। হিসাবগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী ইউসুফ আলী, জাফরুল হাসান শরীফ ও ইউসুফ আলীর ল ফার্মের অ্যাকাউন্ট, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা কামরুজ্জামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও মাইনুল ইসলামের ব্যাংক হিসাব।

সংবাদটি শেয়ার করুন