শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুই মন্ত্রীর পরস্পরবিরোধী বক্তব্য

খাদ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ

খাদ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ
  • একই মুখে দুই কথা বাণিজ্যমন্ত্রীর
  • দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না-কৃষিমন্ত্রী

নিত্যপ্রয়োজনীয় ৯ পণ্যের দাম নির্ধারণ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। দুই মন্ত্রীর এমন পরস্পর ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত ৩০ আগস্ট বাণিজ্যমন্ত্রী চাল, গম, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, চিনি, মসুর ডাল, রড ও সিমেন্টের দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। ১৫ দিনের মধ্যে তা কার্যকরের কথাও  ঘোষণা করেন।

১৫দিন পরে (১৭ সেপ্টেম্বর) একটি অনুষ্ঠানে সেই সময়সীমার শেষের দিনে উল্টোপথে হাঁটলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বললেন, দাম বেঁধে দেয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ না, তেল, চিনি বাদে বাকীগুলো দেখবে কৃষি মন্ত্রণালয়। কেননা তারা শুধু ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেঁধে দিতে পারেন। এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু বাকি সাতটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের। দাম বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা আসতে হবে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে। আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কৃষি মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে।

এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক আনন্দবাজারকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, সুনামগঞ্জের বন্যায় উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। আউশের উৎপাদনও কম। আমনে সময়মত বর্ষা না হওয়ায় এখন সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কেননা এবার খড়ার কারণে আমনের ফলন ভাল হবে না এবং আমন রোপনেও দেরি হয়েছে। যদিও গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। আমনের ফলন ভাল হবে না এমন একটা ধারণা মানুষের মধ্যে রয়েছে এবং গমের উৎপাদনও কম। সে কারণেই অনেক মিলার গুদামে খাদ্য মজুত করছে।

আরও পড়ুনঃ  আর্থিক সংকটে ইভিএম প্রকল্প হচ্ছে না: ইসি

এই ব্যবসায়ীদের খাদ্য মজুদ করা ও ভারতের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এর জন্য দরকার কঠোর নজরদারি ও আইনের প্রয়োগ। কেননা দাম বেঁধে দেয়া কঠিন কাজ। তাদের কি ম্যাকানিজম আছে তা আমি জানি না। এ নিয়ে আলোচনা করা দরকার। সমন্বিত সভায় বসে পদ্ধতি বের করা যেতে পারে। তবে কাজটি খুবই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জের।

তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সারাবিশ্বে অর্থনীতি, খাদ্য নিয়ে একটা অস্থিরতা থাকবে। জ্বালানি খাদ্যসহ অর্থনীতি নিয়ে সারা পৃথিবী একটা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর থেকে বিচ্ছিন্ন নই। সারা বিশ্বে খাদ্যশষ্যের দাম বেড়েছে এবং অস্থিরতা আছে এর শিকার আমাদের হতে হবে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তা সত্ত্বেও এই অস্থিরতা থেকে যাচ্ছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরই জনসংখ্যা বাড়ছে। এই মানুষের চাহিদা মেটানো অনেক কঠিন এবং চ্যালেঞ্জের। আমরা পর্যাপ্ত মজুত করেছি, বিদেশ থেকেও আমদানি করছি। যাতে মানুষের খাদ্য কষ্ট না হয়। যারা সীমিত আয়ের মানুষ তাদের জন্য ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিয়েছি। আশা করছি কোন হাহাকার বা বিপর্যয় হবে না। মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে সেজন্য আমরা দু:খিত।

সংবাদটি শেয়ার করুন