খুলনার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নদী বেষ্টিত দিঘলিয়া উপজেলা। দেড় লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলাটির জন্মলগ্ন থেকেই ছিল অবহেলিত। তবে, প্রাচীনতা ও সমৃদ্ধির দিক থেকে দিঘলিয়া উপজেলা অনন্য। উপজেলাটি খুলনা শহর লাগোয়া হয়েও খুলনা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন।
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় পাল্টে যাচ্ছে দিঘলিয়া উপজেলার দৃশ্যপট। খুলনা শহরসহ দেশের প্রায় সকল জেলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সরকার হাতে নিয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নির্মাণাধীন স্বপ্নের ভৈরব সেতু। এ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় হবে ৭৩৭ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত রয়েছে আতাই ও আঠারোবাকী সেতু। যেটি নির্মিত হলে খুলনা শহরসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ উন্নত হবে। এছাড়া আরও রয়েছে দিঘলিয়া, তেরখাদা, রূপসা উপজেলায় আন্তঃযোগাযোগের জন্য চারলেনের ২৪ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক। বাস্তবায়ন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। আতাই নদীর উপরে প্রস্তাবিত সেতুটি নির্মাণে স্পেন সরকার ৫০ বিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয়েছে।
দিঘলিয়া সেনহাটী ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। এছাড়া অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নত আবাসনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে মনোরম দৃশ্যের বাড়ি। দিঘলিয়া সেনহাটী বকশীবাড়ী এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। দিঘলিয়ার সুগন্ধি গ্রামে প্রক্রিয়াধীন সরকারি পলিটেকনিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎফুল্লতা। দিঘলিয়া উপজেলার উন্নয়ন সম্পর্কে আলাপকালে উপজেলা র্নিবাহী অফিসার মাহবুবুল আলম জানান, এলাকায় যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলনা ‘জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার তাদের জন্য এক হাজারের অধিক আধা পাকা ঘর তৈরি করে দিয়েছে। যাদের জমিও নেই, ঘরও নেই এ ধরণের ১২০ পরিবারকে জমিসহ আধাপাকা ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দিঘলিয়া উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে নতুন নতুন পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরে অবকাঠামো গত উন্নয়ন হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যুতবিহীন এলাকায় বিদ্যুৎলাইন সম্প্রসারণ করে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। যে উন্নয়ন হয়েছে ও হতে যাচ্ছে তাতে ‘গ্রাম হবে শহর’ প্রধানমন্ত্রীর এমন স্বপ্নের বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে দিঘলিয়া উপজেলা।
