উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজির হোসেনের নির্দেশে মালমাল বের করে ক্লাস নিয়েছেন শিক্ষকরা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণিকক্ষ। এর মধ্যে শিক্ষকরা বসেন একটি কক্ষে। আর একটি দখল করে মালামাল রেখেছেন হাতীবান্ধা উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ঠিকাদার আব্দুল হামিদ হামিদুল। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মালমাল বের করে ক্লাস নিল শিক্ষকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বলেন, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মিঠুন বর্ম্মণকে এ বিষয়ে তাকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত ক্লাসরুম ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মোল্লা জানান, নির্বাহী অফিসার নাজির হোসেন স্যারের নির্দেশে দরজা ভেঙে মালামাল বের করা হয়েছে। সকাল থেকে ওই কক্ষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছ, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনে ৩ শ্রেণিকক্ষে আমরা ভাগ করে করে পাঠদান করে আসছি। তবে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ৪ বছরে নির্মাণ কাজ শেষ না করে উল্টো পুরাতন ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে প্রায় ৪ বছর মালামাল রেখেছেন ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার। এতে একশ্রেণি কক্ষেই এক সঙ্গে চলছে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির পাঠদান। তিনজন শিক্ষক একটি কক্ষে একসঙ্গে তিনটি ক্লাস নিচ্ছেন। শিশু শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে কখনো বারান্দায়, কখনো মাঠে খোলা আকাশের নিচে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শিউলি বেগম বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে ঠিকাদারকে বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। কিন্তু তারা বিষয়টি আমলে না নিয়ে একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে মালামাল রেখেছেন। এতে করে শিক্ষাথীদের ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
অভিযোগ উঠেছে, ওই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও অধিকাংশ টাকা উত্তোলন করেছেন ঠিকাদার ও হাতীবান্ধা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল।
এবিষয়ে যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল এর সাথে একাধিকবার যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভি করেনি। হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি জেনেছি খুব দ্রুত ওই ঠিকাদারকে মালামাল সরানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।