ঢাকা | সোমবার
১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কান পরিষ্কারে জীবিকা

কান পরিষ্কারে জীবিকা

মানুষের কান পরিষ্কার করা তার নেশা। আর তাইতো কান পরিষ্কার করাকে নেশা থেকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন সৈয়দ আলী ভূঁইয়া। প্রায় ৪০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভবে মানুষের কান পরিষ্কারের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে, অফিস-আদালতে ঘুরে, মানুষের কান পরিষ্কার করে যা আয় করেন সেই টাকায় চলে তার সংসার।

সৈয়দ আলী ভুঁইয়া ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের মাঠবালিয়া গ্রামের মৃত বারেক ভূঁইয়ার ছেলে।

নগরকান্দা বাজারসহ এলাকার বিভিন্ন বাজার এবং অফিস আদালতে ঘুরে ঘুরে মানুষের কান পরিষ্কার করা তার একমাত্র পেশা। প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে কান পরিস্কার করে যে টাকা আয় করেন তা দিয়েই তার সংসার চলে।

দরিদ্র পিতা মাতার সংসারে অভাব অনটন থাকায়, লেখাপড়া তেমন করতে পারেনি সৈয়দ আলী। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সংসারের হাল ধরতে, গ্রামে ঘুরে ঘুরে চুড়ি ফিতা বিক্রি শুরু করেন।  এক পর্যায়ে রংপুর জেলায় চলে যান। তিনি ১৯৭৯ সালে সেখানে আব্দুল মজিদ মিয়া নামে এক কলেজ শিক্ষকের কাছ থেকে কান পরিষ্কারের বিদ্যা শিক্ষা গ্রহন করেন। সেখানে ৩ বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে, নিজেই শুরু করেন কান পরিষ্কার করার কাজ। সেই থেকে এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন সৈয়দ আলী। প্রায় ২০ বছর ধরে নিজ এলাকায় এসে মানুষের কান পরিষ্কারের কাজ করছেন।

নগরকান্দা সদর বাজারে কথা হয় সৈয়দ আলী ভূঁইয়ার সাথে। তিনি জানান, মানুষের কান পরিষ্কার করে, প্রতিদিন তিন থেকে চার শত টাকা আয় করেন। জমিজমার মধ্যে আছে মাত্র আড়াই শতাংশ বাড়ী। সেখানে ছোট একটি দোচাঁলা ঘর রয়েছে। তার চার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায়, তারা স্বামীর সংসার করছেন। দুই ছেলে বিয়ে করে তাদের নতুন সংসার শুরু করেছেন। কিন্তু বাড়ীতে শুধুমাত্র একটি দোচালা ঘর থাকায়, সেই ঘরেই সবাই মিলে বসবাস করতে হচ্ছে। তার ছোট ছেলে বিপ্লব ভূঁইয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে।

সৈয়দ আলী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর ধরে হার্টের রোগে ভূগছি। আমাকে প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকার ওষুধ খেতে হয়। মানুষের কান পরিষ্কার করে, যা আয় হয় তা দিয়ে ঠিক মতো সংসারই চালাতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে ধার দেনা করে নিজের ওষুধ কিনতে হচ্ছে। আমি খুবই কষ্টে সংসার চালাচ্ছি। কিন্তু সরকারি ঘর এবং কোনো আর্থিক সহায়তা আমি পাচ্ছিনা।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী টুলু বলেন, আমরা এব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তার জন্য কিছু করতে চেষ্টা করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন