- চিংড়ি পোণা-খাদ্যের মূল্য বেড়ে দ্বিগুণ
- লোকসানের শঙ্কায় চিতলমারির চাষিরা
- মধ্যস্বত্বভোগিদের কারসাজিতে
বাংলাদেশের সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি চাষে লাভের বদলে এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। হঠাৎ চিংড়ির বাজারদর নেমে আসায় চরম হতাশায় ভুগছেন চাষিরা। খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাগেরহাটের চিতলমারীতে চিংড়ি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।
চিংড়ি চাষিরা জানান, প্রতিকূল অবহাওয়ার সঙ্গে সংগ্রাম করে এখানকার চাষিরা বছরের পর বছর ধরে চিংড়ি চাষ করে আসছেন। অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টিসহ নানা ধরণের রোগ-বালাইয়ে ঘেরের চিংড়ি মারা যাওয়ার পাশাপাশি বিষ দিয়ে এক শ্রেণির চোরচক্র চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এমন নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে চাষিরা চিংড়ি চাষ করলেও তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না।
চলতি বছরে চিতলমারি উপজেলায় ৪৭ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে বাগদা ও গলদা চিংড়ির চাষ হয়েছে। এখানে মোট ঘেরের সংখ্যা ১৬ হাজার ৭১০টি। বর্তমানে চিংড়ি পোণা ও চিংড়ি খাদ্যের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চাষিদের দাবি আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির দর ঠিক থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির কারণে তারা সঠিক দাম পাচ্ছেন না। এলাকার অধিকাংশ চাষি বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক এবং দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অধিক মুনাফায় টাকা এনে চিংড়ি চাষে ব্যয় করেছেন।
এ অবস্থায় তারা কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন সে চিন্তায় দিশেহারা। বিষয়টি তদারকির মাধ্যমে চাষিরা যাতে ন্যায্যমূল্য পান সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের চিংড়ি চাষি সাধন বৈরাগী, পাড়ডুমুরিয়া গ্রামের উত্তম বিশ্বাস, মানিক মণ্ডলসহ অনেকে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর চিংড়ি কেজি প্রতি ২ থেকে ৩শ টাকা দাম কমেছে অথচ চিংড়ি খাদ্য এখন দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু মধ্যস্বত্বভোগির কারসাজির কারণে চিংড়িচাষিরা সঠিক দাম পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে এ চাষিরা চালান ঘরে তুলতে পারবেন কি না সে বিষয়ে চিন্তিত।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার শেখ আসাদুল্লা জানান, বছরের এ সময়টায় চিংড়িসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাজারদর একটু কমে আসে। তবে কারসাজির মাধ্যমে দর কমানো হলে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।