তৃণমূল পর্যায়ে স্বল্প শিক্ষিত, দুঃস্থ, অবহেলিত, নির্যাতিত ও অসেচতন নারীদের সচেতনা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনের লক্ষ্যে কাজ করছে নারী ও শিশু মন্ত্রনালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
সারা দেশে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে আইজিএ (ওএঅ) প্রশিক্ষণ প্রকল্প চালু করা হয়। এ প্রকল্পের আওয়ায় দুটি ট্রেড ( ফ্যাশন ও ব্লক বাটিক এবং পিষ্টাল শোবিজ ও মোমবাতি) প্রশিক্ষণে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ১৬ ব্যাচে সাড়ে ৮০০ মহিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে কাজ করছে।
দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আগ্রহী নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। প্রতিটি নারী যতটুকু শিক্ষায় শিক্ষিত ততটুকু দিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারেন। তিন মাসের ব্যাচ হলেও এদের প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে ৬০ দিন। দৈনিক ৬ ঘণ্টা করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নারীরা। প্রশিক্ষণ শেষে এদের ভাতা ও প্রশিক্ষণ সনদ প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মোরশেদ আলম বলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর দেশের স্বল্প শিক্ষিত ও অনগ্রসর নারীদের কর্মসংস্থানের কাজ করছে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিভিন্ন রকমের কাজ শিখাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আপাতত দুটি ট্রেডে ফ্যাশন ও ব্লক বাটিক এবং পিষ্টাল শোবিজ ও মোমবাতি তৈরির প্রশিক্ষণ চলছে। কমলনগরে এই পর্যন্ত ১৬ ব্যাচে প্রায় ৮’শ মহিলা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। প্রশিক্ষনার্থীরা স্বাবলম্বী হতে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলার চর ফলকনের আবিদা সুলতানা রুমি, সুফিয়া আক্তার ও চর জাঙালিয়ার সালমা আক্তারসহ অনেক কাজ করছে। যারা কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
মোরশেদ আলম আরও বলেন, এছাড়াও কিছুদিন পর পর দেশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিউটিফিকেশন, মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, কম্পিউটার এপ্লিকেশন, ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সুইং মেশিন অপারেটর মেইনটেইন, মাশরুম ও জৈব চাষাবাদ, পেষ্ট্রি এন্ড বেকারি প্রোডাক্ট এবং নার্সারী প্রশিক্ষণ নিতে চিঠি ইস্যূ করা হয়। আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ নিতে সবসময় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাবলম্বী উদোক্তা হতে কাজ করছে।
দুইজন প্রশিক্ষণগ্রহনকারী (আবিদা ও সুফিয়া) জানান, তারা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ফ্যাশন ও টেইলারি প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তারা অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে অর্থ আয় করছে। ব্লক ও টেইলারী কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। তাদের সাথে অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে সেলাই মেশিন কিনে বাড়িতে কাজ করছে। এতে তারা মোটামুটি স্বাবলম্বী হচ্ছে। তারা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
সামিয়া আক্তার বলেন, তিনি ব্লক বাটিক ও ফ্যাশন টেইলারী প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে কাজ করছেন। এখন তিনি বড় করে দোকান দিয়ে ব্যবসায় করতে চাচ্ছেন।
প্রশিক্ষক শিক্ষক রুম্পা জানান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে উপজেলায় দুটি ট্রেডে ১৬ তম ব্যাচে প্রায় আটশত অসচ্ছল নারী ফ্যাশন ও ব্লক বাটিক এবং পিষ্টাল শোবিজ ও মোমবাতির তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই নিজস্ব আঙ্গিকে সেলাই মেশিনে কাজ করে সংসার চালাচ্ছে।
