বগুড়ার গাবতলীতে ডিলারদের কাছে ইউরিয়া সারের জন্য এখনো দীর্ঘক্ষণ লাইন ধরেও সার না পাওয়ার আক্ষেপ অনেক কৃষকের। কৃষকদের অভিযোগ, সার দেয়ার শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সব সার।
গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের ছানাইপুকুর গ্রামের ভেটু আকন্দ, খিড়াপাড়া গ্রামের মোখলেছার রহমান, ডিহিডওর গ্রামের সবুজ প্রাং, চকরাধিকা গ্রামের জলিল মন্ডল, কাজলারপাড়া গ্রামের লাভলী রহমান, উত্তর সরাতলী গ্রামের মনছের রহমান ও নিজকাঁকড়া গ্রামের ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমনের এ ভরা মৌসুমে ইউরিয়া সারের অভাবে সবুজ রংয়ের আমন ধান গাছগুলো লালচে হয়ে যাচ্ছে। সরকারি মূল্যে সারবিক্রি করা হবে- এমন খবর শুনে তাঁরাসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় হাজার কৃষক গাবতলীর সুখানপুকুরে সবুর ডিলারের দোকানে সকাল ৮টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর সার প্রয়োজন মত মিলছে না। তাই শেষ পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক কৃষকদের কপালে সার জোটেনি।
এ প্রসঙ্গে সুখানপুকুর এলাকার সবুর ডিলার বলেন, তিনি ইউরিয়া সার বরাদ্দ পেয়েছেন ২২০ বস্তা। আর কৃষক উপস্থিত হয়েছেন প্রায় হাজার। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ইউরিয়া সার বিক্রি করার জন্য যে বরাদ্দ পান, তার চেয়ে বেশ কয়েকগুণ কৃষকের উপস্থিতি ঘটে।
নেপালতলীতে সার নিয়ে কৃষক ও ডিলারদের মাঝে হট্রোগোল দেখতে পাওয়া যায়। তবে ভুক্তভোগী কৃষকরা ক্ষোভে বলেন, ডিলারদের কাছে সরকারি মূল্যে সার না পেলেও বস্তা প্রতি চারশ থেকে পাঁচশ টাকা বেশি দিলেই কালোবাজারে সহজেই মিলছে ইউরিয়া সার। অথচ অসাধু ওই সার ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে সারের পিছে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক কৃষক বাধ্য হয়েই ছুটে যাচ্ছেন গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গাবতলী উপজেলায় বিসিআইসি অনুমোদিত সারের ডিলার রয়েছে মোট ১৫টি, বিএডিসি ডিলার ১৫টি এবং খুচরা সার ব্যবসায়ী ৪০টি। তিনি বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের বাইরে সারের দাম বেশি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরেও কেউ সারের দাম বেশি নিলে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। এবারের আমনের মৌসুমে ১৭ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। ইতোমধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণও হয়েছে। ডিলারদের কাছে প্রতিনিয়ত ধর্ণা দিয়েও সার না পাওয়ার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সারের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি করার। সারের অতিরিক্ত চাহিদা চেয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।খুব তারাতারি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।