- সোনার গহনা, অর্থসহ সর্বশ হারাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা
ভয়ঙ্কর মাদকের প্রভাবে ফরিদপুরে একাধিক ব্যক্তি তাদের মূল্যবান সোনার গহনা স্বেচ্ছায় তুলে দিয়েছেন অপরাধীদের হাতে। এমন দুটি ঘটনার শিকার ভুক্তভোগীরা জিডি করেছেন থানায়।
ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের শ্বাস নামে পরিচিত স্কোপোলামিন নামক ড্রাগের মাধ্যমে ঢাকায় এর আগে এভাবে মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও এবার ফরিদপুরে ঘটছে এমন ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে, তিন ব্যক্তি শহরে এ অপরাধ করে এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে থাকতে সক্ষম হচ্ছে।
জানা গেছে, ফরিদপুরে গোয়ালচামট গৌর গোপাল আঙিনা এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইদ্রিস তালুকদারের (৭৫) স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬২) গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার নানা ও নানুর ব্যাংক থেকে পেনশনের টাকা তুলে বাড়ি ফেরার জন্য শহরের ইমাম স্কয়ার থেকে একটি অটো রিকশায় উঠেন। ওই রিকশায় চালক ও দুজন যাত্রী ছিলেন। ইদ্রিস তালুকদার সামনে চালকের পাশে আর আলেয়া বেগম পিছনের সিটে বসেন। এসময় অটোতে বসা দুজন আলেয়া বেগমকে নিচে পড়ে থাকা একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, দেখেনতো এটি আপনার জরুরি কোন কাগজ কি-না। তখন আলেয়া বেগম বলেন, আমিতো চশমা আনিনি। একথা বলার পরে তারা কাগজটি আলেয়া বেগমের নাকের কাছে নিয়ে দেখায়। এরপরই আলেয়া বেগম তাদের কথামতো তার গলার চেইন, কানের দুল ও হাতের আংটি তাদের হাতে খুলে দেন। এরপর তারা এসব মালামাল নিয়ে ওই দম্পতিকে কিছুদূর পর্যন্ত নিয়ে মিয়া পাড়া সড়কের কাছে নামিয়ে দেয়। যাওয়ার সময় তারা ভাঁজ করা ওই কাগজটি তার হাতে ধরিয়ে দেয়। যার মধ্যে সোনালি রঙের প্লাস্টিক জাতীয় কিছু ছিলো।
এদিকে, বাড়ি ফেরার পরেও অনেকটা সময় মোহগ্রস্ত ছিলেন আলেয়া বেগম। অনেক সময় পরে তার ছেলের জিজ্ঞাসাবাদে সব খুলে বললে তারা বুঝতে পারেন প্রতারক চক্রের খপ্পরে তারা সবকিছু খুইয়েছেন।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় গত ৬ সেপ্টেম্বর একটি জিডি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনেও এমন একটি ঘটনার অভিযোগ পেয়েছেন তারা। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী তার নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন তুলে দিয়েছেন অপরাধীদের হাতে।
জানা গেছে, অপরাধীদের টার্গেট হওয়ার পর এরা এ ভয়ংকর মাদকের শিকার হয়ে নিজের কাছে থাকা সবকিছু সামান্য অনুরোধেই তুলে দেয় অপরাধীদের হাতে। টাকাপয়সা সোনাদানা, মোবাইল, এমনকি নিজের ইজ্জত পর্যন্ত স্বেচ্ছায় খোয়াতে হয় এদের খপ্পরে পড়লে।
এব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, অভিযোগগুলি গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়েছে। সিসি ক্যামেরা দেখে জড়িত অপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।