সোমবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেম্বার হত্যা মামলায় জেলহাজতে চেয়ারম্যান

মেম্বার হত্যা মামলায় জেলহাজতে চেয়ারম্যান

নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুরে সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত সূত্রধরকে (৫৫) দলবেঁধে কুপিয়ে হত্যার মামলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টু ও তার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান খানকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। গত সোমবার সকাল ১১টার দিকে তারা দুজন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চাইতে গেলে নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ মোশতাক আহমেদ এই আদেশ দেন।

এর আগে গত ২২ জুন রাতে সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বেঙ্গল এলাকার কাঠবাজারে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সুজিত সূত্রধর (৫৫) হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি হাজীপুরের বেঙ্গল এলাকার কাঠবাজারে কাঠ ও ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর ছেলে সুজন সূত্রধর (২৭) ও ঘটনাস্থলে থাকা দ্বীন ইসলামও (৫৫) আহত হন। এই ঘটনায় হত্যাকান্ডের দুদিন পর ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে মামলা করেন নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর।

ওই মামলার আসামীরা হলেন, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ খান পিন্টু (৫৫), তার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান খান (৪৫), স্থানীয় ইউপি সদস্য বদর উদ্দিন সরকার (৬০), কাওসার মাহবুব (৩৫), ফেরদৌস সালাউদ্দিন (৩৫), তৌহিদ আক্রাম (৩০), তানভীর সরকার (৩০), রাকিব সরকার (৩২), মামুন মোল্লা (৩৮), দেলোয়ার হোসেন (৩২), তারেক মিয়া (২৫), আকবর মিয়া (২৫), আজমল সরকার (৫০), মো. মাসুম (২৬), শিমুল মাহমুদ (২২) ও সোহাগ মিয়া (২৩)।

আরও পড়ুনঃ  কেঁচো সারে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন

আদালত সূত্রে জানা যায়, হত্যাকান্ডের পরপরই উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন ইউসুফ খান পিন্টু ও তার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান খান। আগাম জামিনের ৬ সপ্তাহের মেয়াদ শেষ হয় ১২ আগস্ট। এরপরই সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলার নির্ধারিত শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইউসুফ খান পিন্টু ও মনিরুজ্জামান খান উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক মোশতাক আহমেদ তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবদুল বাছেদ ভূঁইয়া।

এর আগে হত্যাকান্ডের পরদিন মো. মাসুম, শিমুল মাহমুদ ও সোহাগ মিয়া নামের তিন আসামীকে গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়। এছাড়াও পরবর্তী সময়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আজমল সরকার, মামুন মোল্লা, রাকিব সরকার, তারেক মিয়া নামের আরও চার আসামী জেলহাজতে রয়েছেন। এ নিয়ে এই মামলায় মোট ৯ আসামী জেলহাজতে আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার বাদী নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধরের ভাষ্য, হত্যাকান্ডের সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টু, তার ছোটভাই মনির ও ইউপি সদস্য বদর উদ্দিন সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাদের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর কর্মী তানভীর, দেলো, নয়ন, রাকিব, তারেক, মামুন ও কানুসহ আরও কয়েকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হত্যাকান্ডে অংশ নেন। এ সময় আমাদের দোকানে বার্নিশের কাজ করা শ্রমিকদের সরিয়ে দিয়ে তারা বাবাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। তানভীর, রাকিব, দেলো, নয়ন, মামুন এই চারজন তার বাবার মাথায় ও গলায় কোপ দেন। আমার বাবাকে যারা এমন নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 

আরও পড়ুনঃ  তিন পার্বত্য জেলায় সকল উৎসব স্থগিতের আদেশ

নরসিংদী আদালত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত সূত্রধর হত্যাকান্ডের ঘটনায় জামিন চাইতে আসা ইউসুফ খান পিন্টু ও মনিরুজ্জামান খান নামের দুজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। এই মামলায় তারা দুজন বাদেও আরও সাত জন আসামী জেলহাজতে আছেন।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন