কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল গ্রামে ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। আতংকে দিন কাটাচ্ছেন ধরলা পাড়ের শতশত পরিবার। গত তিন মাসে ধরলার ভাঙনে নদী নিকটবর্তী গ্রামের ফসলিজমি, চলাচলের একমাত্র সড়কের প্রায় তিনশত মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে ওই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। দ্রুত ভাঙনরোধের ব্যবস্থা না করলে চর-গোরকমন্ডলের পুরো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা স্থানীয়দের।
চর গোরকমন্ডল এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এ এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙন শুরু হয়। গত দুই মাসে প্রায় শতাধিক বিঘা আবাদি জমি, গাছপালার বাগান ও বাঁশঝাড় নদী গিলে খেয়েছে। আর গত এক সপ্তাহে আমাদের চলাচলের একমাত্র সড়কটিও নদীর গর্ভে চলে গেছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে বাড়ি ভিটাও নদীতে চলে যাবে।
চর গোরকমন্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন জানান, আমার এ গ্রামে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পরিবার বসবাস করে। তাছাড়া এ গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাদ্রাসা, ৪টি মসজিদ এবং একটি সরকারি আবাসন প্রকল্পসহ বেশকিছু গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইতোমধ্যে ১০টি পরিবার ধরলার ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি পরিবার অন্য জায়গায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে নদীর তীরবর্তী চর-গোরকমন্ডল নামক গ্রামটি।
এ প্রসঙ্গে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, চর গোরকমন্ডল এলাকার নদী ভাঙন উদ্বেগজনক। ভাঙন প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে আবেদন করে মাননীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র দুইশত জিও ব্যাগ প্রদান করেছে। যা দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। তিনি চর গোরকমন্ডল গ্রামটি ধরলার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধরলা তিস্তাসহ যে সকল এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে আমরা সেই সব এলাকা পরিদর্শনসহ নদী ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করছি। জিওব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চলমানও রয়েছে।