শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বালুদস্যুদের আগ্রাসন

রাতের আঁধারে অবৈধ বালু উত্তোলন

রাতের আঁধারে অবৈধ বালু উত্তোলন
  • হবিগঞ্জে প্রশাসনের অভিযানের তোয়াক্কা করছে না বালু ব্যবসায়ীরা

হবিগঞ্জের কয়েকটি উপজেলায় প্রশাসনের অভিযানেও থামানো যাচ্ছেনা বালু খেকোদের আগ্রাসন। প্রভাবশালী বালুখেকো চক্রটি অবৈধভাবে রাতের আধারে ফের বালু উত্তোলন করে আসছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বালু বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে করে একদিকে সহজেই ওই প্রভাবশালী মহলটি বনে যাচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। অন্যদিকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে তৎপর ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আর্থিক জরিমানা, বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার মেশিন ও পাইপ পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে প্রশাসন।  

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘উপজেলার কোনো এলাকায় অবৈধভাবে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি বা বালু উত্তোলন করে কেউ বিক্রি করতে পারবেন না। এসব মাটি ও বালু বিক্রি বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা সদরের মাছুলিয়াসহ খোয়াই নদীর বিভিন্ন এলাকা, বাহুবল উপজেলার রুপাইছড়া রাবারবাগান, কালাকুলা পাহাড়ী ছড়া, সুন্দ্রাটিকি, করাঙ্গী-কামাইছড়া বালু মহাল, নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদী, মাধবপুরে ছড়া, সোনাই নদী, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কালনী-কুশিয়ারা, চুনারুঘাট উপজেলার পানছড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাহাড়ি টিলা, লালচান্দ বাগান এলাকার ছড়া ও টিলা, ওসমানপুর কাঁঠালিয়া মুড়িছড়া এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালী বালু খেকো চক্রটি। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা সক্রিয় হয়ে উঠায় হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। খবর পেয়ে বিভিন্ন সময় প্রশাসন অভিযান চালালে বন্ধ রাখা হয় বালু উত্তোলন। অভিযান শেষ হলেই আবারো তারা ফের শুরু করে বালু উত্তোলন। এরপর চক্রটি বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। আর এতে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ চক্রটি। তাছাড়া চুনারুঘাটের ইছালিয়া ছড়ার সিলিকা বালু কোয়ারীর ইজারা নেন সুজাতুল হক ভুঁইয়া নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু ওই ব্যক্তি ইছালিয়া ছড়া থেকে বালু উত্তোলন না করে পাশের মুড়িছড়া থেকে দিনরাত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সিলিকা বালু উত্তোলন আসছেন। তিনি সরকারি বিধিমালা ও আইন অমান্য করে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও প্রাণ প্রকৃতির ক্ষতি করে ওই এলাকার জারুলিয়া, গোবর খোলা, গাজীপুর চা বাগান, ওসমানপুর ও দুধপাতিল এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করেন। যে কারণে এসব স্থান থেকে বালু বিক্রি করায় পরিবহন চলাচলে অনেক এলাকার রাস্তা ভেঙ্গে পড়ে। এতে করে এসব এলাকার জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। অবৈধভাবে বালু বিক্রি বন্ধ করতে অনেকেই প্রতিবাদ করেন বলে জানান।

আরও পড়ুনঃ  গাজীপুরে বিপুল পরিমান নকল ঔষধ বিক্রির দায়ে ৫ ফার্মেসীকে জরিমানা

সোমবার বিকেলে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে চুনারুঘাটের মুড়িছড়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক। এ সময় তিনি বালু উত্তোলন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকায় ওসমানপুর এলাকার মৃত নুর হোসেনের ছেলে বুরহান উদ্দিনকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করে বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ৭টি ড্রেজার মেশিন ও উত্তোলনকৃত বালু জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত বালু ১ লাখ ১৪ হাজার ৬শ টাকা নিলামে বিক্রি করেন এবং কিছু পাইপ বিনষ্ট ও ড্রেজার মেশিন জব্দ করে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর কাছে  জিম্মায় দেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন