ঢাকা | রবিবার
২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সফরে নেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সফরে নেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে সফরে যেতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। যদিও গত রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে খুব উচ্ছাসের সঙ্গে জানিয়েছিলেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন। তবে গতকাল সোমবার সেই সফরে থাকেননি তিনি। তাকে ছাড়াই তিন মন্ত্রী, ৩ প্রতিমন্ত্রীসহ ৬ জন এবং ২ উপদেষ্টাসহ সর্বমোট ৯ জন মন্ত্রী সফরে গেছেন।

সফরে না যাওয়ার ব্যাপারে অসুস্থতাকে সামনে নিয়ে এসেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে প্রধানত বিদেশে প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীই হয়ে থাকেন দ্বিতীয় ব্যক্তি। তবে তিনি সফরে না থাকলেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সফরে গেছেন। তাছাড়া সফরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ ও ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে কখনও প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় এ ধরনের (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর না যাওয়া) ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে জানতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনে কল করে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) অসুস্থতা বোধ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাননি।’

তবে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো জানায়, ঢাকা ও দিল্লিতে কর্মরত বাংলাদেশের একাধিক কর্মকর্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে না আসার বিষয়টি তাদের কাছে গতকাল সকালে নিশ্চিত করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন ভারত সফর করছেন না, তা নিয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করেননি।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত রবিবার গভীর রাতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত না যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়ার আগে দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ সম্পর্কে অবগত হয়।

উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরেই নানা মন্তব্যের জন্য বিতর্কিত হয়ে আসছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’

তার এ বক্তব্য নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। বিএনপির নেতারা বলেন সরকার টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শক্তির দ্বারস্থ হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী তার পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশও পাঠান। ঠিক তার কয়েক দিন আগেই ১২ আগস্ট বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ ‘বেহেস্তে আছে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের এই মন্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন