নওগাঁর নিয়ামতপুরের বালাতৈড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটেছে। উদ্বোধনের আগেই ল্যাব থেকে ৬টি ল্যাপটপ চুরি হয়ে গেছে। চুরির ৬দিন অতিবাহিত হলেও ল্যাপটপ উদ্ধার হয়নি।
সরেজমিনে জানা যায়, গত ৩১ আগষ্ট বুধবার দিবাগত রাতে বালাতৈড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব থেকে ৬টি ল্যাপটপ চুরি হয়ে যায়। ল্যাবের তালা না ভেঙে, লকের নাট খুলে ল্যাবে থাকা ১৭টি ল্যাপটপের মধ্যে ৬টি নিয়ে যায় চোর। তবে চুরির ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দরজার লকের কাছে আগুন দিয়ে পড়ানো হয়। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মচারিদের বিবরণ অনুযায়ি চুরির পেছনে রহস্য রয়েছে। তবে কি সে রহস্য পুলিশ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
বিদ্যায়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুন্নাহার বলেন, ওই দিন আমি সকালে প্রথম আমার বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আলী আহসানের কাছ থেকে ফোন পাই। তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ল্যাবের দরজা খোলা রয়েছে। আমি সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের সভাপতি, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ফোনের মাধ্যমে অবগত করি এবং বিদ্যালয়ে ছুটে যাই।
পরে বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক ও অন্যান্য সহকারি শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে ল্যাবে গিয়ে দেখি ১৭টি ল্যাপটপের মধ্যে ৬টি ল্যাপটপ, দুইটি ল্যাপটপের ব্যাগ ও মাউস চুরি গিয়েছে। এরপর থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করি। চুরির ৬দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ চুরি যাওয়া ল্যাপটপ ও চোরের কোনো সন্ধান করতে পারিনি।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আলী আহসান বলেন, আমি প্রতিদিনের মত সকাল ৮টায় বিদ্যালয়ে আসি। বিদ্যালয়ে আসার আগেই কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে চলে এসেছিল। আমি আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা বলেন, স্যার দোতলায় কম্পিউটার ল্যাবের দরজা খোলা। আমি তখন তাকিয়ে দেখি সত্যি ল্যাবের দরজা খোলা। সঙ্গে সঙ্গে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ফোন করে অবহিত করি। তারা এসে ল্যাবে গিয়ে দেখে ৬টি ল্যাপটপ নাই। দরজার লকের নাট পড়ে রয়েছে। যা পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে আসার সময় নাটগুলো ছিলো না।
বিদ্যালয়ের আরেক সহকারি শিক্ষক হাসান শাহরিয়ার (ফটিক) বলেন, আমরা বিদ্যালয়ে এসে দেখি ল্যাবের দরজা খোলা এবং ৬টি ল্যাপটপ চুরি হয়ে গেছে। দরজার কাছে নাট পড়ে ছিলো।
আরেক শিক্ষক মোবারক হোসেন বলেন, আমার বাড়ি বিদ্যালয়ের কাছে হওয়ায় আমি তাড়াতাড়ি বিদ্যালয়ে আসি। এসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে ল্যাবে গিয়ে দেখি ৬টি ল্যাপটপ চুরি হয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরি আবেদ আলী বলেন, আমি নিচতলার সকল দরজা চেক করে একটি কক্ষে অবস্থান করছিলাম। সারারাত জেগে ছিলাম। কখন চুরি হয়েছে বুঝতেও পারি নাই। দোতলার মেইন গেটের চাবি আমার কাছে থাকে না। চাবি প্রধান শিক্ষিকা ও আইসিটি শিক্ষক বিপেন্দ্রনাথ স্যারের নিকট থাকে। আমি শুধু নিচের ঘরগুলো দেখতে পাই। উপরের কোনো ঘর দেখতে পাই না।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ওসি হুমায়ন কবির বলেন, এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।