ঢাকা | রবিবার
২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধকল না কাটতেই ফের বন্যা

ধকল না কাটতেই ফের বন্যা

পানিবন্দি ১৫ হাজার পরিবার, ভাঙনের শঙ্কা

  • বন্যা নিয়ন্ত্রণে খুলে গেছে ব্যারাজের ৪৪ গেট

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চল ও তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তাপারের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যারাজে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানি  কমলেও ভাটিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছে তিস্তা চর এলাকার ১৫ হাজার পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল ৩টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সে.মি.নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। ৫২.২৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার তিস্তার পানি রাত ৯টায় বিপৎসীমার ৩০ সে.মি. ওপরে পানি প্রবাহিত হলেও শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ১৫ সে.মি. ওপরে প্রবাহিত হয়।

তিস্তার ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় নিজেদের সবটুকু গুছিয়ে নিচ্ছেন নদী পারের মানুষ। তিস্তা পারে কয়েকবার বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই আবারও দেখা দিয়েছে বন্যা। এ দিন নদীর ভয়াভয় ভাঙন অপর দিন আবারও বন্য দেখা দেওয়ায় তিস্তার পাড়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে।

এই বছরে পঞ্চম দফা বন্যায় জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ১৫ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে  জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিংগীমারী, সিন্দুর্না,পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, চোংগাডারা, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়আনি গ্রামের ছালাম মিয়া জানান, হঠাৎ তিস্তার পানি বেড়ে ঘর দুয়ারে পানি উঠে গেছে। অনেক কষ্টে রাত্রি যাপন করছি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চোংগাডারান গ্রামের মতিয়ার ইসলাম বলেন, গত ১৫ দিন আগে তিস্তার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছি আজ হঠাৎ পানি বেড়ে গেছে। ভাঙ্গন ও বন্যায় হামা দিশেহারা।

এদিকে আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ও রাস্তাঘাট ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।

এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে অত্র ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডে প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। তিনি আরো জানান, শুক্রবার দুপুরে পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে জেলার চর এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পানিবন্দি পরিবার গুলোর তালিকা তৈরি করার জন্য। তালিকা অনুযায়ী খুব দ্রুত ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন