ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিস্তা পাড়ের মানুষ চতুর্থ দফায় বন্যার আশঙ্কা করছেন। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প’ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ৫২.৭০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত রেকর্ড করা হয়। এর আগে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি (৫২.২৭) বিপৎসীমা ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রাবহিত হয়। এরপর সকাল থেকে পানি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
এদিকে তিস্তা পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার ও ভাঙনের আশঙ্কা করছেন জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার কালমাটি, চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টির পানিতে নিম্নাঞ্চলেও কয়েকশত পরিবার পানিবন্দী হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও ভবন নির্মাণ করে পানির গতিরোধের বন্যা দেখা দেয়।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, বিকেল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাদশা মিয়া জানান, তিস্তার পানি কমা-বাড়ার ফলে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। ভাঙনে বাড়ি ভিটা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হলে পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে ২নং ওয়ার্ডের চিলমারী পাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, উজানের ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দোয়ানি ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতের মধ্যে তিস্তার পানি কমতে পারে।