শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নাঙ্গলকোটে আ’লীগ-বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

অর্ধশত শিক্ষার্থীসহ আহত ১৫০

অর্ধশত শিক্ষার্থীসহ আহত ১৫০

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আ.লীগ-বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নাঙ্গলকোট পৌর সদর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে এ আর উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশত ছাত্র-ছাত্রী, ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য ও আ’ লীগ এবং বিএনপির অন্তত একশ পঞ্চাশ জন আহত হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, লাকসাম ও কুমিল্লা চিকিৎসা নেন আহতরা।

হামলা চলাকালে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। হামলায় পুলিশের গাড়ি, মোটরসাইকেল ও লোটাস চত্বর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে আটক করে।

তাৎক্ষণিক কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নাঙ্গলকোট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওসি সহ আহতদের খোঁজ খবর নেন।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপূণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বেগম খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি। সকালে এ বিক্ষোভ বাস্তবায়নে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতা-কর্মীরা আসার সময় পুলিশসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। শেষে পৌর বাজারের খিলা সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে গেলে পুলিশ বাঁধা অপেক্ষা করে নাঙ্গলকোট পৌর সদর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে যাওয়ার সময় পৌর বাজার রেল স্টেশন থেকে আ’লীগের একটি প্রতিবাদ মিছিল আসে। এ সময় উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। থেমে থেমে দু’ঘণ্টা ধরে পাথর নিক্ষেপ করে লোটাস চত্বর, বিএনপির অফিস ও পৌর বাজারের সৌন্দর্যবর্ধন ভাংচুর করে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেলের ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল এ আর উচ্চ বিদ্যালয়ের গিয়ে পড়লে অর্ধশত ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়।

আরও পড়ুনঃ  সরকার আর শিক্ষিত বেকার তৈরি করতে চায় না : শিক্ষামন্ত্রী

সংঘর্ষে বিএনপিকর্মী মাইন উদ্দিন, স্বপন, রাসেল, নূরনবী ও ফরহাদসহ ১০ থেকে ১৫জন গুরুতর আহত হয়। আওয়ামী লীগের আহতরা হলেন, রুহুল আমিন, সাইফুল ইসলাম, নাজমুল, মাসুদ আলম মিয়াজী, আশিকুর রহমান, ফারুকসহ অন্তত ২০জন আহত হয়। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুমিল্লার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, এ সরকারের মন্ত্রীরা জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। এখন আগেরমতো পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও মন মতো বাজার করা যায় না। সাহস থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। আপনাদের জামানতও থাকবে না। সকাল বেলায় এ বিক্ষোভকে বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতা-কর্মীরা আসার সময় পুলিশসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। তারপরও আমরা বিক্ষোভ মিছিল করে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ, যবিলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আজকে গফুর ভূঁইয়া নেতৃত্বে নাঙ্গলকোটে অস্ত্র নিয়ে লোটাস চত্বর ও পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করে। তাদের অস্ত্র চিনিয়ে নিয়ে যায়। আমরা আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) এমপির নির্দেশে শান্ত ছিলাম। আগামীতে এ ধরনের কোনো ঘটনা যাতে ঘটতে না পারে সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। তবে এ ঘটনায় তাদের কোনো নেতা-কর্মী আহত হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  পহেলা আগস্ট থেকে ইতালি যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বিএনপির কোনো নেতা এ পোগ্রামের অনুমতি নেয়নি। তার বিনা উস্কানিতে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ওসি ফারুক হোসেন সহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয় ও সহকারী পুলিশ সুপারের গাড়ি ভাংচুর করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন