ঢাকা | মঙ্গলবার
১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একযোগে বদলি ১৬ কর্মকর্তা

একযোগে বদলি ১৬ কর্মকর্তা

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ১৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসাথে বদলী করা হয়েছে। একসাথে ১৬জন কর্মকর্তাকে বদলী করার রেকর্ড এবারই প্রথম। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বুড়িমারী স্থলবন্দরের প্রধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন বদলী সংক্রান্ত আদেশের কপি পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো বলে, চিঠি অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করব।

বুড়িমারী স্থল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, ঢাকা, আগারগাঁও কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) বিভাগের ডি এম আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বদলীর আদেশের চিঠি গত ২৫ আগস্ট একটি জারি করা হয়। এতে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে বদলী করে সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন, ট্রাফিক পরিদর্শক জাহীদুর রহমান, হিসাবরক্ষক আদনান খালিদ বসুনিয়া ও ক্যাশিয়ার ভ্রমর কুমার সরকারকে কুড়িগ্রাম জেলার সোনাহাট স্থলবন্দরে, ট্রাফিক পরিদর্শক সালাউদ্দিনকে ফেনী জেলার পরশুরাম বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, ট্রাফিক পরিদর্শক শাহিন মাহমুদ ও আমিনুল হককে ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরে, ওয়্যার হাউজ সুপারিনটেনডেন্ট মানিকুর রহমানকে ফেনী জেলার বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, একই পদের মিনহাজ উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, আবুল বাসার ও কম্পিউটার অপারেটর হাসমত উল্লাহকে যশোর জেলার বেনাপোল স্থলবন্দরে, ওয়্যার হাউজ সুপারিনটেনডেন্ট মাছুদ রানাকে দিনাজপুর জেলার হিলি স্থলবন্দরে, একই পদের ফিদা হাসানকে পঞ্চগড় জেলার বেনাপোল ও এস.এম মাসুম বিল্লাহকে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় স্থলবন্দরে এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজাকে শেরপুর জেলার ঠাকুগাঁও স্থলবন্দরে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে। একই তারিখে উল্লেখিত স্থলবন্দর গুলো হতে পদায়নকরা ১১ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে যোগ দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নানা অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির একটি লিখিত অভিযোগ এ বছরে দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। এতে ভারতীয় ট্রাক হতে ওজন স্টেশনে অবৈধভাবে টাকা আদায়, খাদ্যশস্যের ট্রাক হতে টাকা গ্রহন, বিল শাখায় জালিয়াতি করে সরকারি রাজস্ব আত্নসাৎ, আগত পণ্যবাহী গাড়ি ও ওজনের গাড়ির গড়মিল, রাত্রিকালীন ট্রাক চার্জ জমা না দিয়ে আত্নসাৎ, ১/২ দিনের ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে না থাকা, ভুয়া চালান করা, ওজন স্কেলে পণ্যের ওজন কম দেখিয়ে টাকা আদায়, বহিরাগতদের নিয়ে কর্মস্থলে আড্ডা দেওয়া প্রভৃতি নানা অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব হরিলুট ও লুটতরাজ করার উল্লেখ করা হয়েছে।

এ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ড এফ এজেন্ট, শ্রমিক, আমদানিকারক ও বন্দর ব্যবহারকারীদের উল্লেখ করে দেওয়া অভিযোগে স্বাক্ষর না থাকলেও দুর্নীতি দমন কমিশন বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর নেয়। গত ৭ আগস্ট অভিযোগের কপি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নিকট দেয় কমিশন। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গত ১৪ আগস্ট অভিযোগের কপিটি পেয়ে ১৬ আগস্ট আমলে নেয়। এর ১১ দিনের মাথায় উল্লেখিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে বদলীর নির্দেশ দেয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, ঢাকা।

বুড়িমারী স্থল বন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, যারা বদলি হয়েছেন তারা দীর্ঘদিন থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে চাকরি করে আসছেন। বন্দরের কিছু ব্যবসায়ীকে  বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছেন এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের বদলি হয় আমরা খুব খুশি।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আমিসহ ১৬ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বদলী করা হয়েছে। তবে কি কারণে বদলি করা হয়েছে এটি আমার জানা নেই। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমাদেরকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন