কুলাউড়ায় চা শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়েই যাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার নবিন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় চৌমুহনীতে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। সকালে সড়কপথ অবরোধ ও বিকেলে আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকিয়ে আন্দোলন করেছেন শ্রমিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়কপথ ও রেলপথের যাত্রীরা। উপজেলার কালুটি, রাঙ্গিছড়া, রাজানগরসহ অন্যান্য বাগানের হাজার হাজার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন।
দেশে চাবাগানসমূহে শ্রম অসন্তোষ নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গত সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত শ্রমিক নেতৃবৃন্দের জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিক নেতারা প্রশাসনের সঙ্গে আগের মজুরিতে বাগানে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নেন এবং লিখিতভাবে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
তবে সাধারণ চা শ্রমিকরা এখন তিনশ টাকা মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বৈঠকের পর থেকেই সাধারণ শ্রমিকরা মাঠে নেমেছেন। তারা মনে করেন, চা শ্রমিক নেতারা এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন তারা শ্রমিকের আন্দোলনের কেউ না। তারা শ্রমিকদের সাথে দালালি করে ১২০ টাকা মজুরিতে একাত্মতা পোষণ করেছে। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি ৩০০ টাকা। শ্রমিকরা জানিয়েছেন ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন না।
বৈঠকের পর চা শ্রমিকদের কাজে ফিরতে বলা হয় । কিন্তু সাধারণ শ্রমিকরা এরপর থেকে আন্দোলন আরও জোরালো করার ঘোষণা দেন। গতকাল সকালে উপজেলার নবিন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় চৌমুহনীতে সকাল থেকেই অবরোধ করে শ্রমিকরা। এতে বড়লেখা, জুড়ি উপজেলার শত শত গাড়ি অবরোধে আটকা পড়ে। বিকেলে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে রাখে শ্রমিকরা।
পরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো.মেহেদি হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার ওসিআব্দুস ছালেক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করেন। শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
চা শ্রমিক কালাই নাইডু বলেন, ‘আমরা ১২০ টাকা মজুরি মানি না। এই টাকায় আমাদের সংসার চলে না। আমরা ৩০০ টাকা ছাড়া ঘরে ফিরবো না’।
চা শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ৩০০ টাকা ছাড়া তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন না। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তারা বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে অপারগতা প্রকাশ করেন।