জিসিবির পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে আগের ছয় প্রতিষ্ঠান
- বার্থ অপারেটরদের চূড়ান্ত নিয়োগ ১৭ আগস্ট
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পণ্য ওঠানামার কাজে পুনরায় নিয়োগ পেয়েছে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা আগের ৬ বার্থ অপারেটররাই। তারা হলো- মেসার্স এফ কিউ খাঁন এন্ড ব্রাদার্স লিমিটেড, ফজলী সন্স লিমিটেড, মেসার্স বশির আহমেদ এন্ড কোম্পানি লিমিটেড, মেসার্স এ এন্ড জে ট্রেডার্স, এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস এবং এম এইচ চৌধুরী লিমিটেড। এ নিয়ে তারা গত ১৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের বার্থ অপারেটরের কাজ করে আসছে। সর্বশেষ ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির’ বৈঠকে গত ১৭ আগস্ট এই ৬ বার্থ অপারেটরদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) ছয়টি টার্মিনালে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ছয়টি বার্থ অপারেটর নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। যার টেন্ডার জমা দেয়ার শেষ দিন এবং টেন্ডার বাক্স খোলার দিন নির্ধারিত ছিল পরবর্তী ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ‘সিঙ্গেল স্টেজ টু এনভেলপ’ পদ্ধতিতে জমা পড়া টেন্ডারে ছয় লটে ১৪টি দরপত্র জমা পড়ে।
বর্তমানে উক্ত ছয়টি টার্মিনালে যেই ছয়টি বার্থ অপারেটর প্রতিষ্ঠান এবং একটিমাত্র টার্মিনাল অপারেটর দুটি করে লটে টেন্ডার জমা দিয়েছিল। এতে ১ ও ৫ নম্বর লট ছাড়া অপর ৪টি লটে বর্তমান অপারেটররাই দুটি করে দরপত্র জমা করেছিলেন। টেন্ডারে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল- ৬ নম্বর বার্থে এফ কিউ খান এন্ড ব্রাদার্স, ফজলী এন্ড সন্স ও সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। ৯ নম্বর বার্থে এফ কিউ খান এন্ড ব্রাদার্স ও ফজলী সন্স। ১০ নম্বর বার্থে বশির আহমেদ এন্ড কোম্পানি এবং মেসার্স এ এন্ড জে ট্রেডার্স। ১১ নম্বর বার্থে বশির আহমেদ এন্ড কোম্পানি ও মেসার্স এ এন্ড জে ট্রেডার্স। ১২ নম্বর বার্থে এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস, এমএইচ চৌধুরী ও সাইফ পাওয়ারটেক। ১৩ নম্বর বার্থে এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস ও এম এইচ চৌধুরী টেন্ডার দাখিল করেছিল।
এরমধ্যে এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজের দরপত্র ছাড়া বাকি ৫টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করে ৫ বছরের জন্য অপারেটর হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শেষ দিকে এসে অনিয়মের অভিযোগে ওঠায় নৌ মন্ত্রণালয় পুরো প্রক্রিয়াটাই বাতিল করে দেয়। এখন নতুন দরপত্রে আগের সেই বার্থ অপারেটররাই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেয়েছেন।
বন্দর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিবছর কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিয়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা থাকে। যাতে বিগত বছরের হ্যান্ডলিং থেকে বেশি পরিমাণ হ্যান্ডলিং করা যায়। এতে প্রবৃদ্ধির ধারাও অব্যাহত থাকে।
আর বন্দরে যেহেতু পণ্য ওঠানামার কাজটি করে বার্থ অপারেটরগণ। তাই এই কাজে নিয়োগের পূর্বে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সব বিবেচনায় যারা নিয়োগ পায়নি তারা অভিযোগ তুলেছিল। পরে সেটি মন্ত্রণালয় তদারকি করে। মাঝে করোনার কারণে নিয়োগ পক্রিয়ায় কিছু সময় ব্যয় হয়। এখন মন্ত্রণালয় ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির’ বৈঠকে সেটি চূড়ান্ত করে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জিসিবি লট নং-১ এ হ্যান্ডলিং অব্যাহত রাখতে কনটেইনার বার্থ অপারেটর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স এফ কিউ খাঁন এন্ড ব্রাদার্স লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে খরচ হবে ৭৬ কোটি ৯৫ লাখ ২৮ হাজার ৯৯০ টাকা।
অন্যদিকে, জিসিবি এলাকায় লট নং-২ (বার্থ নং-৯)-এ কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছে ফজলী সন্স লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮৫ টাকা।
এছাড়া, লট নং-৩ (বার্থ নং-১০)-এ ৭৭ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৫ টাকা সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে মেসার্স বশির আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। লট নং-৪ (বার্থ নং-১১)-এ কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ অ্যান্ড জে ট্রেডার্সকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৭ কোটি ৮৮ হাজার ২৩০ টাকা।
লট নং-৫ (বার্থ নং-১২) এ কর্গো হ্যান্ডলিংয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেডকে নিয়োগ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এজন্য ব্যয় হবে ৭৭ কোটি ৬ লাখ ৩ হাজার ৯১০ টাকা। লট নং-৬ (বার্থ নং-১৩) এ কর্গো হ্যান্ডেলিংয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এম এইচ চৌধুরী লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৭৭ কোটি ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩৫ টাকা।