- ৫ লাখ টাকার মালিকের সন্ধানে মাইকিং
ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় মহাসড়কে প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পায় সৌরভ নামের এক যুবক। সেই টাকার মালিক না পেয়ে মালিকের সন্ধানে মাইকিং বের করে প্রশংসায় ভসছেন তিনি। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে শহড়জুড়ে এ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সৌরভ ঠাকুরগাঁও শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কোকারিজের ব্যবসায়ী।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় মহাসড়কে রাস্তার ধারে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন সৌরভ। কোনো পথচারীর প্রয়োজনীয় ব্যাগ হতেপারে ভেবে ব্যাগটি সঙ্গে নেন তিনি। পরে ব্যাগ খুললে সেখানে প্রায় ৫ লাখ টাকা দেখতে পান। টাকার সন্ধানে কেউ খুঁজতে আসবে বা মাইকিং বের করতে পারে ভেবে অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু ব্যাগ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও পাওয়া যায়নি সেই টাকার মালিক। তাই মালিকের সন্ধানে মাইকিং বের করার ব্যবস্থা করেন তিনি। আর এ মাইকিং বের হবার পর থেকেই জেলাজুড়ে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন সৌরভ।
মাইকিং শুনে শহরের ব্যবসায়ী আদম আলী জানান, এ মাইকিং প্রমাণ করে যে, মানবতা এখনও বেচে আছে। পৃথিবীতে এখনও ভালো মানুষ আছে। সৌরভের সর্বময় মঙ্গল কামনা করি। তাকে দেখে সমাজ অনেক কিছু শিখতে পারবে।
শহরের বাসিন্দা আবু সালেহ জানান, সকালে বাসা থেকে বের হয়েই আমি টাকার মালিকের খোজে বের করা মাইকিংয়ের শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে অবাক হয়েছি। তবে ঘটনাটি অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। ধন্যবাদ এ উদ্যোগকে।
মাইকিং বের হবার পর সোশাল মিডিয়া ফেসবুকেও চলছে তুমুল আলোচনা। বিভিন্ন মানুষ সাধুবাদ জানিয়ে স্টেটাস দিচ্ছে। কমেন্টে অনেকেই বিষয়টির প্রশংসা করছে।
মাইকিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরে ফেসবুকে একটি স্টেটাস দেন তানভীরু নামের এক যুবক। সেখানে সোহেল ঢালি নামের একটি আইডি থেকে কমেন্ট করেছ, ঈমানদার ব্যক্তি সমাজে আছে বলেই সমাজ তথা পৃথিবী টিকে আছে। সেই পোস্টে মানবতার জয় হোক বলে কমেন্ট করেছে এমন আরও প্রায় ৫০ জন ফেসবুক ইউজার।
এ বিষয়ে সৌরভ বলেন, ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় মহাসড়কে ব্যাগটি পরে থাকতে দেখি আমি। পরে ব্যগ ভর্তি টাকা দেখতে পাই। এ টাকা হতে পারে কারো ব্যবসার মূল পুঁজি। হতে পারে চাকরিরত অফিসের টাকা। অথবা এ টাকাই হতেপারে কারো স্বপ্ন পুরণের উছিলা। তাই ভেবেছি টাকাটি মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়া জরুরি। তাই মাইকিং করে মালিক খোজা হচ্ছে।
টাকার মালিক স্টেডিয়ামের সামনে মদিনা মেশিনারিজ দোকানে এসে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল হোসেন বলেন, টাকা হারিয়েছে জানিয়ে কেউ এখনও আমাদের কাছে কোনো জিডি করেনি। তাই টাকার মালিকের বিষয়ে এখনি আমরা কোনো সহায়তা করতে পারছিনা। তবে টাকার মালিক খোজার এ অভিনব ঘটনাটি প্রশংসনীয়।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) শাহারিয়ার বলন, অবশ্যই এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যুবক সৌরভকে সাধুবাদ জানাই। যে কোনো রকমের প্রশাসনিক সহায়তা প্রয়োজন হলে আমরা পাশে থাকবো।