ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিবপুরে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

শিবপুরে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বেশ কয়েকজন মৎস্য চাষি মৎস্য কর্মকর্তার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এর প্রতিকার চেয়েছেন।

বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত ফাহিমুল আরেফিন শিবপুর উপজেলায় মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর থেকেই ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ, এনএটিপি-২, উন্মুক্ত জলাশয়ে বিল নার্সারি স্থাপন, পুকুর খননসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বাৎসরিক বরাদ্দের অর্থ লোপাটের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মৎস্য চাষিরা।

জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন সেবা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এরমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে মাছের প্রকারভেদে বরাদ্দ ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা হলেও তাদেরকে ১২/১৩ হাজার টাকা ও ৪/৫ বস্তা মাছের খাদ্য দেয়া হয়েছে। উন্মুক্ত জলাশয়ে বিল নার্সারী প্রকল্পের ৩ জনও সঠিক বরাদ্দ পায়নি, এনএটিপি ২ প্রকল্পের ৯ টি ইউনিয়নের ১৮ জন সিআইজি প্রদর্শনীর মাঝে ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা থাকলেও চার বস্তা খাদ্য ও চার থেকে সাড়ে চার হাজার করে টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এসব প্রকল্পের চাষিরা।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, মাছিমপুর ইউনিয়নে বালিয়াহানি গ্রামে ইউনিয়ন প্রদর্শনী বরাদ্দ দিলেও এ নামে কোনো গ্রাম সেখানে নেই। এছাড়াও একই পরিবারের মাঝে তিনটি প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চক্রধা ইউনিয়ন সেবা প্রকল্পের চাষি লাকুশি গ্রামের বাবুল মিয়া জানান, তিনি শিং ও কই মাছের একটি প্রদর্শনী বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রকল্পের বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা হলেও তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার টাকা এবং ৫ বস্তা এসবি কোম্পানির মাছের খাদ্য যার বাজারমূল্য সাড়ে সাত হাজার টাকা হবে।

বাঘাব ইউনিয়ন সেবা প্রকল্পের চাষি পাচপাইকা গ্রামের মোখলেছুর রহমান বলেন, পাংগাশ মাছের প্রদর্শনী বরাদ্দ ৫০ হাজারের মধ্যে ১৩ হাজার টাকা ও ৫ বস্তা খাদ্য পেয়েছেন। এতো কম টাকা কেনো দেয়া হলো জানতে চাইলে বাকি টাকা অফিসে খরচ হয়েছে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

উপজেলা মৎস্য প্রডিউসার অর্গানাইজেশন সমবায় সমিতির সভাপতি অহিদুজ্জামান অহিদ বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ সঠিকভাবে পায়না বলে চাষিরা আমার কাছেও বলেছেন। সঠিক বরাদ্দ না পাওয়ায় মাছ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। শিবপুর উপজেলা মৎস্য উৎপাদনে অন্যতম হলেও মৎস্য কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এর সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের সঠিক বরাদ্দ ও পরামর্শের মাধ্যমে মৎস্যচাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার দাবী জানাচ্ছি।

এবিষয়ে অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। বরাদ্দের বাকি টাকা পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে মৎস্য চাষিরা আমার কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন