ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক প্রহরী বাঘ

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক প্রহরী বাঘ
  • বাঘের জন্যই টিকে আছে সুন্দরবন
  • বাঘ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে
  • মোংলা ও শরণখোলায় র‌্যালি-আলোচনা সভা

সুন্দরবন বাঁচাতে হলে বাঘ বাঁচাতে হবে। কারণ বাঘ হচ্ছে বনের প্রাকৃতিক প্রহরী। সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান ও টিকে থাকার জন্য বাঘের ভূমিকা অনন্য। উপকূল টিকে আছে সুন্দরবনের জন্য। আর সুন্দরবন টিকে আছে বাঘের জন্য। আর এ বাঘ বিলুপ্ত হলে বাস্তুসংস্থান নষ্ট হয়ে সুন্দরবন উজাড় হবে। খালে বিষ দিয়ে মাছ মারা, বৃক্ষ নিধন, বন্যপ্রাণী হত্যা, চোরাচালান সিন্ডিকেট ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে বাঘ এবং সুন্দরবন বিপর্যস্ত। বাঘ এবং বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন রক্ষায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, সরকার এবং বন সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক হতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে সুন্দরবনে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা নিরুপনের জন্য একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী জরিপ পরিচালনা করতে হবে।  বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার সকালে মোংলা ও শরণখোলায় আয়োজিত সভায় এ সকল কথা বলেন বক্তারা।

সকালে মোংলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে ‘বাঘ ও বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। মোংলা উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার। আলোচনা সভায় অতিথির বক্তৃতা করেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বাগেরহাটের আহ্বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নূর আলম শেখ। এসময় পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, বাঘ বাঙালীর সাহসের প্রতীক। মানুষের লোভ-লালসার কারণে বাঘ বিলুপ্ত হতে চলেছে। বাঘ চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। সভাপতির বক্তৃতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন, সরকার বাঘ এবং বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন রক্ষায় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার সুন্দরবন এবং বাঘ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমেরিকা থেকে আগত পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক তরুণ গবেষক ইভান টিমস, বাপা’র কেন্দ্রিয় নেতা তোফাজ্জেল সোহেল, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, জিটিভি’র সিটি এডিটর রাজু আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন রুমা, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার জেসমিন প্রেমা, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার আব্দুর রশিদ হাওলাদার, সুন্দরবনের মৎস্যজীবি বেলায়েত সরদার, বাপা নেতা ইস্রাফিল বয়াতি, কমলা সরকার, শেখ রাসেল, নদীকর্মী হাছিব সরদার প্রমুখ।

সভার আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ৯টায় ‘সুন্দরবনের বাঘ’ শীর্ষক শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া বাঘ ও বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি মোংলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে শরণখোলায় বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বন বিভাগসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির যৌথ আয়োজনে শরণখোলা বাজারে শোভাযাত্রা শেষে প্রদীপন সাইক্লোন শেল্টার চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান মিলন, শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ ইকরাম হোসেন, সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হোসেন, সহকারি বন সংরক্ষক সুপন রায় প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন