ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেলিকপ্টারে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন প্রবাসী ছেলে

হেলিকপ্টারে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন প্রবাসী ছেলে

প্রথমবারের মতো স্বচোখে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়ন দেখলো গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটী গ্রামের মানুষ। প্রবাসী ছেলের মনোবাসনা ছিলো একদিন তার গর্ভধারীনি মাকে উড়োজাহাজ কিংবা হেলিকপ্টারে চড়াবেন। সেই স্বপ্ন থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। এইচএসসি পাশ করার পর স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যান মালয়েশিয়ার রাজধানী কোয়ালামপুরের লেন্স ইউনির্ভাসিটিতে। পড়াশোনা শেষ করে সেখানকার একটা স্বনামধণ্য কোম্পানীতে চাকরি নেন। সেখানে ছয় বছর থাকার পর দেশে আসার ইচ্ছে জাগে প্রবাসী ছেলের।  বলছি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটী গ্রামের লাল মাহমুদ প্রধান বাড়ির মো. রমিজ উদ্দিন-শামসুন্নাহার দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে আশরাফুল মোর্ত্তুজার কথা। মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতেই প্রবাসী ছেলের ব্যতিক্রমী এ আয়োজন। মাসহ পরিবারের আরও তিন জনকে আনা হয়েছে হেলিকপ্টারে করে। এমন খবরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটী গ্রামে প্রথম হেলিকপ্টার ও মা-বাবা ও ছেলেকে দেখতে ভিড় করে গ্রামের মানুষজন।

গত বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের খিরাটী গ্রামের সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার মাঠে এমন ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খিরাটী এলাকার মো: রমিজ উদ্দিন-শামসুন্নাহার দম্পতির ছেলে মো: আশরাফুল মোর্ত্তজা (২৬)। একযুগ ধরে মালয়েশিয়ার রাজধানী কোয়ালালামপুরে থাকেন। তার বাবা মো: রমিজ উদ্দিন (৬৫) ও মা শামসুন্নাহার বেগমের (৫৫) স্বপ্ন পূরণ করতে মালয়েশিয়া থেকে গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানী ঢাকার হযরত শাহ্জালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন। পরে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে মাকে নিয়ে নিয়ে খিরাটী এলাকার সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার মাঠে নামেন আশরাফুল মোর্তুজা। গ্রামের মানুষ তাদের মা-ছেলেকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।

হেলিকপ্টারে মাকে আনা হবে এমন খবর আগেই প্রচার হয় গ্রামে। হেলিকপ্টার ও মা শামসুন্নাহার বেগমকে দেখতে সহস্রাধিক মানুষ জড়ো হয় খিরাটী গ্রাম এলাকায়। হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসার পর মাকে নেওয়া হয় বাড়িতে। এমন দৃশ্য দেখতে সহস্রাধিক লোক ওই রাস্তায় জড়ো হয়।

গ্রামবাসীরা জানান, আমাদের অজপাড়া গাঁয়ে এই প্রথম হেলিকপ্টার এসে নামল। তার মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে করে গ্রামে এসেছেন।

প্রবাসী আশরাফুল আলম মোর্ত্তুজা জানান, আমার স্বপ্ন ছিলো আমার মা-বাবাকে হেলিকপ্টারে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসবো। মা-বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকে চেষ্টা করেছি। তবে আমার মায়ের এই স্বপ্নটা পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে, আনন্দ লাগছে। অনেক দিন পর গ্রামের লোকদের দেখে খুবই ভালো লাগছে। হেলিকপ্টারে আমি, মা, বোন, ভগ্নিপতি ও ভাগিনা এসেছি।

আশরাফুল মোর্তুজার মা শামসুন্নাহার বেগম বলেন, আমার আশা ও স্বপ্ন পূরন করেছে ছেলে আশরাফুল। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। ছেলের জন্য দোয়া করি, আপনারা দোয়া করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন