ঢাকা | রবিবার
২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আড়তে সয়লাবেও দামে চড়া

আড়তে সয়লাবেও দামে চড়া
  • সাগরে মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ

সাগরে জাল ফেলতেই ধরা পড়ছে ইলিশ। এ কারণে কক্সবাজার শহরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারি ঘাটে চারদিকে ইলিশে সয়লাব। জেলেরা মাছ নিয়ে ফিরছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে। জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি। ব্যবসায়ীদের ধারণা, আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে।

তবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গভীর সাগরে যাওয়া ট্রলারগুলো মাছ শিকার করতে পাচ্ছে না বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের পাইকারি মাছ বিক্রির প্রধান কেন্দ্র মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

এদিকে খবর পাওয়া গেছে, এক ট্রলারে ১০০ মণ ইলিশ শিকারের রেকর্ড করে কূলে ফিরেছে মায়ের দোয়া নামে একটি ফিশিং ট্রলার। শুধু মায়ের দোয়া নয়, এ রকম প্রতিটি ট্রলারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ও ১৪৭ প্রজাতির মাছ ভর্তি ট্রলার ভিড়ছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার এহসানুল হক জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকূল সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন জেলার মাছ ভর্তি ট্রলারও ভিড়ছে অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে।

স্থানীয় ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে অনেক মাছের ওজন দুই কেজির চেয়ে বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকলে জালে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে।

জেলেরা বলছেন, রবিবার মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ করেই তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য সাগরে নেমেছিল। কিন্তু তিনদিনই তারা ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে কূলে আসতে পেরেছেন। ইলিশের পাশাপাশি লইট্যা, টোনা, লাল পোয়া, স্যালমন, ফাইস্যাসহ নানাজাতের মাছ বেশি ধরা পড়ছে জালে।

কক্সবাজার অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতি এর সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, ফিশারি ঘাটে পাইকারি ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৩৫ হাজার টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৪২ হাজার টাকায়, ৯০০ থেকে ১০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৭০ হাজার টাকায় এবং ১০০০ থেকে ২০০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ ইলিশ ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, ফরিদপুরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইলিশ ধরতে সাগরে নেমেছে কক্সবাজারের টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার অন্তত ৬ হাজার ট্রলার। বেশির ভাগ ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরের ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে জাল ফেলছে। অবশিষ্ট ট্রলার ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারে জাল ফেলে। এখন কাছের ট্রলারগুলো ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। দূরের ট্রলারগুলো মাছ ধরে ফিরতে আরও দু-এক দিন সময় লাগবে।

স্থানীয় রফিক উদ্দিন জানান, ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়লেও অতিরিক্ত দামের কারনে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষ ইলিশ কিনতে পাচ্ছে না।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, গত বছর কক্সবাজার উপকূল থেকে ইলিশ আহরণ করা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৩১৪ মেট্রিক টন। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন