পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাঁকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিসমতপুর গ্রামসহ আশেপাশের পাঁচটি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো। ওই গ্রামের খোকন খন্দকারের বাড়ি সংলগ্ন পাঁচকরি খালের ওপর নির্মিত এ বাঁশের সাঁকোটি। বর্তমানে সাঁকোটি জরাজীর্ণ ও নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
যুগের স্রোতে বিভিন্ন জনপদের চেহারা পাল্টালেও প্রায় এক যুগেও এখানে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে নির্মিত হয়নি কোন ব্রিজ। সম্প্রতি কিসমতপুর খাটাসিয়া গ্রামীণ সড়ক পাকা হলেও একটি ব্রিজের অভাবে কেওয়াবুনিয়া, ভয়াং, ঝোপখালী, চালিতাবুনিয়া ও কিসমত খাটাসিয়া গ্রামের মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। প্রতিদিন এই ৫ গ্রামের কয়েক শথ মানুষ এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করে থাকে। বর্ষা এলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ঝড়-বৃষ্টিতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, কিসমত খাটাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন কলেজ, পশ্চিম কাঁকড়াবুনিয়া গালর্স স্কুল, গাবুয়া জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসী বিভিন্ন প্রয়োজনে উপজেলা সদরসহ পার্শ^বর্তী কয়েকটি বাজার (শিংবাড়ি, কাঁকড়াবুনিয়া, গাবুয়া, গাজীপুরা বাজার) ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতের জন্য এই সাঁকো ব্যবহার করে থাকেন। এই সাঁকো পার হয়েই অত্র এলাকার অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরও ওই স্থানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংযোগ সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় এক যুগ আগে গ্রামবাসীর উদ্যোগে সুপারি গাছ ও বাঁশ দিয়ে সেখানে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয় । সেই সাকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি দিয়ে পারাপার হচ্ছেন জনসাধারণ। এই সাঁকো পার হয়ে কাজে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ হোসেন ও নয়ন কবিরাজ। এসময় তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এ গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ হলেও এখানে ব্রিজ না হওয়ায় শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি ক্ষেত্রে গ্রামের লোকজনকে নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা মেম্বার মোসাঃ ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, এ সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে। উপজেলা প্রকল্প অফিসের লোকজন ৭-৮ বছর আগে পরিদর্শন করে সাঁকো মেপে গেলেও আজ পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী আশিকুর রহমান জানান, সাঁকো পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।