শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদায় ফিরেছে ভাগ্য

আদায় ফিরেছে ভাগ্য

বিদেশ ফেরত কালাম বস্তায় আদাচাষে সাফল্য পেয়েছেন

আদা চাষ করে সফলতা পেয়েছে বিদেশ ফেরত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কালাম সরকার। বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত ছায়াযুক্ত স্যাতস্যাতে স্থানে ১১’শ বস্তায় আদা চাষ করেন তিনি। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আদা চাষ করেন এবং তাকে দেখে এখন অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কুঠিবয়ড়া গ্রামের কালাম সরকার বিদেশ ফেরত একজন পরিশ্রমী ও উদ্যোমী ব্যক্তি। দীর্ঘ কয়েক বছর প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত অর্থ বিনিয়োগ করে আরো স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছায় তার বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত ছায়াযুক্ত স্যাতস্যাতে ১০ শতাংশ জমিতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ১১’শ বস্তায় জৈব সার ব্যবহার করে বার্মা হাইব্রিড আাদা চাষ করেন।

প্রতি বস্তায় পরিমাণ মত সার ও ঔষধ প্রয়োগ করে তাতে ২ থেকে ৩ টুকরো আদা সৃজন করেন। এখন প্রতি বস্তায় ৫ থেকে ৬ টি গাছ পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। প্রতি বস্তায় গড়ে ১.৫ কেজি আদা হবে বলে আশা করছেন। ১১’শ বস্তায় আদা পাওয়া যাবে প্রায় ১৬৫০ কেজি। বাজার মূল্য ভালো পেলে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার আদা বিক্রি হবে। যার খরচ হবে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এতে আয় হবে কমপক্ষে প্রায় ১ লাখ টাকা।

বিদেশ ফেরত আদা চাষি কালাম সরকার বলেন, আমি পরিশ্রম করতে পছন্দ করি। এতে অর্থনৈতিক ও শারীরিক সফলতা পাওয়া যায়। আমি বাড়ির আঙিনায় পতিত ছায়াযুক্ত স্যাতস্যাতে স্থানে ১১শ’ বস্তায় আদা চাষ করি। সাধারণভাবে আদা চাষের চেয়ে এ পদ্ধতিতে ফলন বেশি হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ আমাকে সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে।

আরও পড়ুনঃ  নীলফামারীতে ২ লাখ ৩৪ হাজার পরিবার পাবে ভিজিএফ’র চাল

তিনি আরও বলেন, আগামীতেও একই বস্তায় আবার আদা লাগাবো। তাতে প্রতি বস্তায় ৩ কেজির বেশি আদা হবে বলে আশা করছি। এখন গাছের বয়স তিন মাস। এ পর্যন্ত ১১শ’ বস্তায় সব মিলিয়ে ১৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আরও প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হবে। তিন মাস পরে সবগুলো বস্তা থেকে আদা হবে কমপক্ষে ১৪শ’ কেজি। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এতে আয় হবে কমপক্ষে এক লাখ টাকা। আমি প্রথম এ পদ্ধতিতে আদা চাষ শুরু করেছি। এগুলো দেখে অন্যান্য কৃষকও উদ্বুদ্ধ হবে।

এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলার কুঠিবয়ড়া এলাকায় বাড়ির আঙিনায় ছায়াযুক্ত পতিত স্যাতস্যাতে স্থানে বস্তা বসিয়ে তাতে আদা চাষ করছেন এক বিদেশ ফেরত যুবক। বিষয়টি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ কৃষকের কাছে একটি নতুন পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ যেমন চাহিদা মেটাতে পারবে, একইভাবে কৃষকও লাভবান হবেন। আর এ বিষয়ে কৃষি বিভাগ যেকোন পরামর্শ বা সহযোগিতা দিতে বদ্ধপরিকর।

তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকের বাড়ির আঙিনায় যদি অন্তত ৫টি বস্তায় বা টবে অথবা সরাসরি মাটিতে ৫ থেকে ১০টি আদা গাছ লাগানো হয়। তাহলে সেই পরিবারের সারা বছর আর কোন আদা ক্রয় করার প্রয়োজন হবে না বলে আশা করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন