- বেশি শঙ্কায় ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ তৈরি করছে ডার্ক ওয়েব। সবচেয়ে বেশি শঙ্কায় রয়েছেন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা। বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্স রেসপন্স টিম (সার্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্যাংক গ্রাহকদের মধ্যে যাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড আছে তাদের অনেকেরই তথ্য ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়ে গেছে। এর জন্য ব্যাংক খাতের ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য তারা বলছেন এর জন্য গ্রাহকেরও অবহেলা রয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
কম্পিউটার ও ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সরকারি প্রতিষ্ঠান সার্ট। সংস্থাটির এক গবেষণায় কার্ডধারীদের তথ্য ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ব্যাংকের নেটওয়ার্কিং দুর্বলতা ও নিম্নমানের ডিভাইস ব্যবহারের কারণেই ডার্ক ওয়েবে অনেক গ্রাহকের তথ্য গেছে। এ বিষয়ে
সার্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর তারিক এম বরকত উল্লাহ বলেন, কোভিডের কারণে ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু কার্ড ইস্যুকারী অনেক ব্যাংকের নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ম্যালওয়ার ও র্যানসামওয়ারে ভর্তি। অন্যদিকে ডেবিট কার্ড পার্সোনাল ব্যাংক একাউন্টের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। ফলে, এগুলোর তথ্যই বেশি ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। সেকারণে গ্রাহকদের সচেতন হবে অনেক বেশি।
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ডার্ক ওয়েব আসলে কি? ডার্ক ওয়েব হলো সাইবার অপরাধীদের ভাড়া করার একটি হাব। অর্থাৎ ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের একটি অন্ধকার জগত এবং এসব সাইটগুলোতে মুখোশ পরা অপরাধীরা বিচরণ করে। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে বিশেষ ওয়েব ব্রাউজার দরকার হয়। অর্থাৎ চাইলেই গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে এসব ওয়েবে ঢোকা যায় না। ডার্ক ওয়েবে যারা থাকে তাদের সক্ষমতা অত্যন্ত বেশি। তারা পেশাদার কালোবাজারি।
জার্মানি, রোমানিয়া, ইটালি, ভারতসহ অনেক দেশের ই-ক্রিমিনালরাই সেখানে আছেন। তাদের চেহারা ঢাকা থাকে কিন্তু তাদেরকে অপরাধ করার জন্য ভাড়া করা যায়। এসব অপরাধীরা হ্যাকিং ছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও পর্ণগ্রাফীর মতো অনেক কিছুর সাথে জড়িত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকগুলো সাইবার নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ না করলে ভবিষ্যতে ঝুঁকি আসবেই। তবে আশার কথা যে বেশ কিছু ব্যাংক তাদের সাইবার নিরাপত্তাকে আন্তর্জাতিক মানে নেয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে।