ঢাকা | বুধবার
১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রক্ষকই যখন ভক্ষক

রক্ষকই যখন ভক্ষক

সালিশকেন্দ্র নির্মাণে ছড়া দখল করলেন মেম্বার

  • জলাবদ্ধতায় ভয়াবহ দুর্ভোগের শঙ্কা
  • খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার দক্ষিণ গঞ্জপাড়া-জিরোমাইল সড়কের এম এ হক মাদ্রাসার পাশে ছড়া দখল করে মাঝখানে নির্মাণ করা হচ্ছে সালিশ কেন্দ্র। সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার জয়নাল আবেদীন মাসুম ছড়া দখল করে এ নির্মাণ কাজ করছেন। নির্মাণ কাজের প্রথম প্রক্রিয়া পাকা পিলার তৈরি শুরু করেছেন তিনি। ছড়ার উপর তিনটি পিলার তোলার কাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় মেম্বার জয়নাল আবেদীন মাসুমসহ এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল। এদিকে ছড়া দখল করে নির্মাণের এ দৃশ্য দেখার কেউ নেই।

দক্ষিণ গঞ্জপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. জাবেদ ও মো. মাহবুব বলেন, পাঁচ-সাতশ পরিবারের বসবাস এ এলাকায়। এটি একমাত্র ছড়া। র্দীঘদিনের পানি চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। ছড়া দখল হলে পানি নিঙ্কাসনের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। যদি বৃষ্টি হয় পানি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। এতে পুরো এলাকায় অল্পতে জলাবদ্ধা সৃষ্টি হবে। অবৈধ দখলকারদের মাধ্যমে ছড়া দখল হচ্ছে। ওরা রক্ষক যদি ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়।  

গোলাবাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার জয়নাল আবেদীন মাসুম বলেন, সামাজিকভাবে বৈঠক করে স্থানীয়দের সালিশের জন্য একটি সালিশকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে ছড়াতে।

তিনি আরো বলেন, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানসহ কথা হয়েছে। তিনি নিজেও এই কাজের জন্য ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন। আমি নিজে ( মেম্বার জয়নাল আবেদীন মাসুম ) ১০ হাজার টাকা দিয়ে এটি করাচ্ছি।

এদিকে খাগড়াছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, সামাজিকভাবে বৈঠক বা বিচার-সালিশের জন্য কোনো স্থান নেই। তাই সমাজের সকলের সম্মতিতে সালিশ কেন্দ্র হিসেবে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে কেউ ওই স্থান দখল করলেও তার দায়ভার কে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না আমরা সকলে যেখানে আছি।

স্থানীয় মাহবুবুল আলম, জাবেদ ও নুরু বলেন, ছড়া দখলের কোনো বিধান নেই। এছাড়াও যেখানে বিচার-সালিশের জন্য সরকার এত অর্থ খরচ করে ইউনিয়ন পরিষদ করেছে। সেখানে এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মত নয়। সামাজিকভাবে বৈঠকের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে তা মোটেও সত্য নয়।

দক্ষিণ গঞ্জপাড়াপাড়া সচেতন এলাকাবাসী জানান, একটি সিন্ডিকেট চক্র দখল কাজের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও সালিশ কেন্দ্র করার খুব বেশি প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে অর্থ দিয়ে জায়গা ক্রয় করে সেখানে করা হোক। ছড়া দখল করে এমন নির্মাণ কেন।

খাগড়াছড়ি সদরের ৩নং গোলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা আনন্দবাজারকে বলেন, ছড়া দখল করে এটা করা যাবে না, নিষেধ করেছি। যদি নির্মাণ কাজ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ছড়া দখল করে ভবন নির্মাণ বিষয় নিয়ে বক্তব্য নিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দু’বার যাওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিক বার ফোনে চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন