ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ছয় দফা দাবিসহ স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়টি ব্যাখ্যা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল আলমের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানা যায়।

১ নং ব্যাখ্যায় বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং ১৯৯৪ সাল হতে চালু রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২৭টি স্টেশনে স্ট্যান্ড এলোন সিস্টেমে টিকেটিং চালু হলেও সময়ের পরিক্রমায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির আধুনিকতার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাধুনিক টেকনোলজিক্যাল কৌশলের মাধ্যমে ৮৩টি স্টেশনে টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সহজ লিমিটেড জেভি বর্তমানে রেলওয়ের টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে।

টিকিট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোন অভিযোগ রেলওয়ের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তা তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

বিগত ২৮ বছর ধরে চলমান সিস্টেমের যাত্রী চাহিদা বা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই সিস্টেমটির মানোন্নয়ন করা হয়েছে, কারণ বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রী সেবা প্রদানের জন্য দেশের নাগরিকগণের নিকট দায়বদ্ধ। যদি রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমের উন্নয়নে সুস্পষ্ট অভিমত, মতামত বা সুপারিশ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২ নং ব্যাখ্যায় জানানো হয়, রেলওয়েতে টিকিট কালোবাজারীর বিরুদ্ধে নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। টিকিটের উপর যাত্রীর নাম, এনআইডি নাম্বার, বয়স, ও জেন্ডার উল্লেখ থাকে যাতে একজনের নামে ক্রয় করা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে না পারে। তা ছাড়া অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাতদিনে সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি রেলওয়ের টিকিট ক্রয় করতে না পারে টিকেটিং সিস্টেমে সে ব্যবস্থা রাখা আছে।

“টিকিট যার ভ্রমণ তার” স্লোগান বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটা ভেরিফাই করে টিকিট ইস্যুর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফি’ জমা প্রদান করা হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সহিত বাংলাদেশ রেলওয়ের এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন নামে বা বিভিন্নভাবে টিকিট ক্রয়ের সুযোগ বন্ধ করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া রেলওয়ে পুলিশ কর্তৃক স্টেশন এলাকায় টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধে নানাবিধ উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধে ইতোমধ্যে রেলওয়ের গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারী অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারও যেকোন সুপরামর্শ পাওয়া গেলে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে বা প্রক্রিয়ায় অনলাইন কোটার টিকিট ব্লক করার বা টিকিট বুকিং করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়াও অনলাইন বা কাউন্টার(অফলাইন) টিকেটিং এর বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকিট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যে কোন নাগরিক রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকিট ক্রয় করতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোন সুযোগ নেই।

এবং ৪ নং ব্যাখ্যায় জানানো হয়, যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেনের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার প্রাক্কালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করতো ২১৮টি।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন