ঢাকা | রবিবার
২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণের ‘কক্সবাজার’ তরুয়া দ্বীপ

দক্ষিণের ‘কক্সবাজার’ তরুয়া দ্বীপ

না দেখলে বুঝতাম না তরুয়া দ্বীপ কক্সবাজারের চেয়েও সুন্দর

সাহিদা আক্তার সুমনা, শিক্ষিক

সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভোলার চরফ্যাশনের তারুয়া দ্বীপ হতে পারে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত। পর্যটনের অপার সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে এই তারুয়া দ্বীপে। কক্সবাজার ও কুয়াকাটার মতো তারুয়া দ্বীপও হতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা। এ দু’টি সমুদ্র সৈকতের চেয়ে তারুয়া দ্বীপের আকর্ষণ যে কিছুই কম নয়, তা এখানে না আসলে বোঝা সম্ভব নয়। এখানে রয়েছে একই সঙ্গে সাগর ও বনের লুটোপুটি সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ।

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা এই দ্বীপটি এরই মধ্যে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। এই দ্বীপের সৌন্দর্যের কথা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ায় শত শত মানুষ এখানে বেড়াতে আসছে। তাই সব মহল থেকে নয়নাভিরাম তারুয়া দ্বীপকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি উঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে দ্বীপটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুললে এটি আরও বেশি আকর্ষণ করবে পর্যটকদের।

দ্বীপটি ঘুরে জানা গেছে, চারিদিকে জলরাশি পরিবেষ্টিত সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে পলি জমতে জমতে প্রায় ৪০ বছর আগে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠে তারুয়া দ্বীপ। এরপরেই সেখানে বন বিভাগ নানা ধরনের গাছপালা রোপণ করে। ধীরে ধীরে তারুয়া দ্বীপটি সবুজের দ্বীপে পরিণত হয়। বাহারি প্রজাতির গাছপালা, তরুলতা, সি-বিচ, বালু, বৈচিত্রময় প্রাণী আর সাগরের উত্তাল গর্জন সব মিলিয়ে এক মায়াবী হাতছানী। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে দ্বীপটিকে সাজিয়ে তুলেছে। তবে সেখানে এখনো গড়ে ওঠেনি মানুষের বসতি। এখানে হরিণ ও ভাল্লুকসহ নানা প্রাণী ও দৃষ্টি নন্দন মাটি রয়েছে। সবুজ বৃক্ষের ঝঙ্কার আর পাখিদের কলরবে মুখরিত তারুয়া দ্বীপ পর্যটন এলাকা হিসেবে গুরুত্বের দাবি রাখে।

এখানে বেড়াতে আসা স্কুল শিক্ষিকা সাহিদা আক্তার সুমনা বলেন, ‘ভোলাতে এমন সুন্দর জায়গা রয়েছে তা আমরা আগে জানতামই না। এখানে এসে বুঝতে পারলাম তারুয়া দ্বীপটি কক্সবাজারের চেয়ে অনেক সুন্দর’। তারুয়া সমুদ্র সৈকত পাখিদের যেন এক অভয়ারণ্য। পাখির কলতানে মুখরিত থাকে প্রায় সবসময়। তবে শীতকালে অতিথি পাখিদের আগমনে পাখির আনাগোনা কিছুটা বেশি থাকে। ভোলা ব-দ্বীপের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ঢালচর, কুকরি-মুকরি ও পর্যটন কেন্দ্র তারুয়া বিচে সবসময়ই পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত থাকে। কোনো হিংস্র পশুর ভয় না থাকলেও বনে রয়েছে শিয়াল, বনবিড়াল, হরিণ, সাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। এছাড়াও দেখা মিলবে লাল কাকড়ার। হাজার হাজার লাল কাকড়া সাদা বালিতে দৌড়ানের অপুরূপ দৃশ্যের।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন