ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বাউষখালী গ্রামে আনুমানিক ২০০ বছরের আগে স্থানীয় যতীন্দ্র নাথ সিংহ নামের এক জমিদার নির্মাণ করেন জমিদার বাড়ী। যা বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী বাবুবাড়ি নামে পরিচিত। গত দুই বছর আগে আলোচনায় আসে জমিদার বাড়ীর দখল নিয়ে। এরপর এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি ঘিরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে বাড়িটি মাদকসেবীদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এর আগে এ মাসের ১১ জুলাই সালথার ২০০ বছরের ঐতিহ্য বাবু বাড়িতে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ দেয় বলে স্থানীয়দের দাবী। পরে বাবু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ওই ঘটনা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে ঐতিহ্যবাহী বাবু বাড়ির পুরানো বিল্ডিংগুলো ঘুরে দেখা যায়, ভয়ানক ইয়াবাসহ মাদক সেবনের নমুনা। দোতলা বিশিষ্ট ভবনটি’র প্রতিটি রুমে ও ছাদে মিলে এসব নমুনা। সেই সাথে মিলে গাঁজা সেবনেরও নমুনাও। পুরো বিল্ডিংটিতে সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ আর প্যাকেট চোখে পড়ার মতো। যেখানে-সেখানে মল-মূত্রও ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবেশটিই যেন মাদকসেবীদের নিরাপদ জায়গা, হয়তো এজন্যই জায়গাটি পছন্দ অনুযায়ী নিয়মিত আড্ডা চলে তাদের।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার বখাটেদের এখানে আড্ডা দিতে দেখা যায়। তাদের ভয়ে কেউ কিছু বলেও না। এই বাবু বাড়িটি দখলের জন্য কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। বাড়িটির কিছু অংশ রুস্তুম নামে একটি ব্যক্তি ভোগ দখলে নিয়েছেন। তিনি সেখানে বসতঘরও গড়ে তুলেছেন।
এ বিষয়ে জমিদার বাড়িটিতে আশ্রমের দায়িত্বে থাকা সেবক শরণার্থী মহারাজ বলেন, এখানে আমি অনিরাপদে থাকি। কাউকে কিছু বলতেও পারিনা। সন্ধ্যার পরে এখানে এলাকার উঠতি বয়সি ছেলেরা আড্ডা দেয়। তাদের ভয়ে বিল্ডিংয়ের ভেতরে গিয়ে দেখিওনা তারা ঐখানে কি করে।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. তাসলিমা আকতার বলেন, জমিদার বাড়িটি সালথার পুরনো ঐতিহ্য। তাইতো অতি শীঘ্রই জমি দখলের ব্যাপারটি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান (সদ্য অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) বলেন, এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় যতীন্দ্র নাথ সিংহ নামের এক জমিদার অন্তত ২’শ বছর পূর্বে এ জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। পরে তার উত্তরসূরি বৈধনাথ বাবু বাড়িটির দখলে ছিলেন। তবে সে ২০১৪ সালে মারা গেলে এ ঐতিহাসিক বাড়িটি শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম আশ্রমকে দেখাশোনার জন্য দেওয়া হয়।