সুনামগঞ্জ আদালতের ব্যতিক্রমী রায়ে স্কুল কলেজের ছাত্রসহ ৬৫ জন শিশুকে ৬টি সংশোধনের শর্তে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জাকির হোসেনের আদালত এমন দৃষ্টান্তমূলক রায় দেন। মারামারি সহ বিভিন্ন অপরাধে ৫২টি মামলায় ৬৫ জন শিশুর নামে বিভিন্ন সময়ে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আদালতের এমন দৃষ্টান্তমূলক রায় কে স্বাগত জানিয়েছে অভিভাবকরা। রায়ে খুশি শিশু ও অভিভাবকরা। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে সকল শিশুকে ফুল ও একটি করে ডায়েরি, ও ছোটদের জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধের গল্প বইটি উপহার দেওয়া হয়। এ সময় সকল শিশুর মা-বাবা ও স্বজনরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ৬টি সংশোধনের শর্ত হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রদত্ত বইটি পাঠ করা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ/হাঁস-মুরগি বা গবাদিপশু পালন/ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ/এসি, টিভি, ফ্রিজ বা মোবাইল সার্ভিসিং এর যেকোনো একটি বিষয়ে কারিগরি বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহন করা, প্রতিদিন অন্তত দুটি করে ভালো কাজ করা এবং তা প্রদত্ত ডায়েরিতে লিখে রাখা, প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা, নিয়মিত ধর্মকর্ম করা এবং বাবামায়ের আদেশ নির্দেশা মেনে চলা, মাদক থেকে দূরে থাকা এবং অন্যকোনা অপরাধে নিজেকক না জড়ানো।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা ৫২টি মামলায় ৬৫ শিশুকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে জড়ানো হয়েছিল। যার কারণে এসব শিশুদের আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হতো। ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছিল। তাই শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে সকল মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালত।
সুনামগঞ্জ প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ শফিউর রহমান বলেন, মাননীয় নারী ও শিশু আদালত বরাবরের মত এবারও ৬২টি মামলায় ৬৫ জন শিশুকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছে। এ নিয়ে মোট ২শ’ উপরে শিশুর প্রবেশনে মুক্তি হয়েছে। আজকে ৬টি শর্তে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা ও গাছ লাগানো। তারা এ শর্তগুলো পালন করছে কিনা আমরা এটা দেখবো। যদি কেউ শর্তগুলো ভঙ্গ করে তাহলে তাদের কে শাস্তি আরোপ করে সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হবে।