- ইউপি সদস্য লাঞ্ছিত
গাজীপুর কালিয়াকৈরে গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবারের বর্ষা মৌসুমেই সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে, বাঁধা উপেক্ষা করে নিম্নমানের কাজ করায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করেছে বিক্ষুব্দরা। মানসম্মত সামগ্রী দিয়ে সড়কের উন্নয়ন কাজটি করার দাবি এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নে একটি প্যাকেজে চার এলাকায় চারটি গ্রামীণ সড়ক এইচবিবি দ্বারা উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ। প্রায় ৭১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই কাজটি পান মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরবর্তিতে ওই কাজটি সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজটি নেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। ওই চারটি সড়কের মধ্যে দরবাড়িয়া কবিরপুর মেইন সড়ক হতে চাতৈলভিটি আসমান মুন্সীর বাড়ির অভিমুখে ১৪৭৬ ফুট দৈঘ্যের সড়কটির উন্নয়ন কাজ চলছে। উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অফিসের অধীনে ওই উন্নয়ন কাজের দেখবাল করছেন ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) নজরুল ইসলাম। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে উন্নয়ন কাজ করায় কয়েক দফায় বাধা দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তবে, তাদের বাঁধা উপেক্ষা করে নিম্নমানের কাজ করায় গত তিন দিন আগে ক্ষুব্দ লোকজনের তোপের মুখে পড়েন ওই মেম্বার। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের পিএস হিসেবে খ্যাত সিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বিরুদ্ধে ওই মেম্বারকে মারধরসহ লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই সড়কের কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন। চেয়ারম্যানই যখন ঠিকাদার, তখন উন্নয়ন কাজে অনিয়ম তো হবেই। যার কারণে আর কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না চেয়ারম্যানের পিএস’ও মেম্বারকে মারধর করেছে। ওই সড়কের অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় আমির আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
চেয়ারম্যানের পিএস নয় দাবী করে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানান, রাস্তায় বালু কম দেওয়ার কথাটি বলায় মেম্বার আমার খারাপ আচারণ করে। তাই তাকে বকাঝকা করেছি। তবে, মেম্বারকে মারধর করা হয়নি।
অনিয়মের কথা অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) নজরুল ইসলাম জানান, রাস্তায় বালু বিছানোকে কেন্দ্র করে সিরাজুল আমার সাথে খারাপ আচারণ করেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন শাকিল মোল্লা জানান, সরেজমিনে গিয়ে দেখি নিম্নমানের ইট-বালু ব্যবহার করছে। পরে ভালো ইট-বালু দিয়ে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। তবে সিরাজুল আমার মেম্বারকে মারছে কিনা? তা আমার জানা নেই। এছাড়া ওই কাজটি আমার বাবা (সাবেক চেয়ারম্যান) ভালো কাজ করার জন্য নিয়েছিলেন। তবে, তাঁর মৃত্যুর পর আমি চেয়ারম্যান হয়েছি। তাই স্থানীয় মেম্বার দিয়ে সে কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করছি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিপ্লব পাল জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। অনিয়মের খবর পেয়ে কাজটি আপাদত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাজে কোনো প্রকার বি-গ্রেডের ইট ব্যবহার করা হলে তা তুলে ফেলা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, ওই অভিযোগটি এখনো দেখি নাই।